খবর ৭১: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ভোটে লড়াই করার চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোট চেয়েছেন হিরো আলম।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে পুনরায় ভোট গণনার আবেদন জমা দিতে রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান হিরো আলম। সেখানেই তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে এ কথা বলেন।
গত ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ এবং বগুড়া-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন হিরো আলম। বগুড়া-৪আসনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত জাসদ প্রার্থীর কাছে মাত্র ৮৩৪ ভোটে হেরে যান তিনি। এর পরেই হিরো আলম অভিযোগ করেন যে এই আসনে ভোট সুষ্ঠু হলেও গণনার সময় ফলাফল পাল্টে দেওয়া হয়েছে। ষড়যন্ত্র করে তাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে হিরো আলম বলেন, ‘তিনি কথায় কথায় বলেন-আসুন খেলা হবে। শক্তিশালী দলের সঙ্গে খেলতে চান। আমি ওবায়দুল কাদের স্যারকে জোর গলায় বলতে চাই, খেলা সবার সঙ্গে করতে হবে না। আমি হিরো আলমের সঙ্গে একটা নির্বাচনে আপনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং আপনি দলীয়ভাবে দাঁড়ান। এরপর আপনি সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে দেখেন খেলা হয় কিনা। খেলার জন্য নাকি উনি মাঠে প্লেয়ার খুঁজে পান না। আমার সঙ্গে একটু প্রতি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে ভোটারদের ভয় না দেখিয়ে সুষ্ঠু ভোট দিয়ে দেখেন।’
হিরো আলম বলেন, ‘আমার নির্বাচনী ফলাফল তারা সুষ্ঠুভাবে সম্পূর্ণ করেনি। এ নিয়ে আমার সন্দেহ ছিল। তাই সবগুলো ভোট কেন্দ্রের ফলাফল আমি জোগাড় করেছি। কিছু কেন্দ্রে আমিসহ প্রায় সব প্রার্থী অস্বাভাবিক ভোট পেয়েছে। ওই কেন্দ্রগুলো উল্লেখ করে দিয়ে আমি জেলা প্রশাসকের কাছে ভোট পুনঃগণনার আবেদন দিয়েছি। তারা আমার আবেদন গ্রহণ করেছে। তবে কবে ফলাফল আবারও গণনা করবে সেই বিষয়ে কিছু জানায়নি। যদি তারা সাড়া না দেয় আমি হাইকোর্টে যাবো।’
হিরো আলম আরও বলেন, ‘সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের স্যার বলেছেন-হিরো আলম জিরো হয়ে গেছে। তবে হিরো আলম কখনো জিরো হয়না। যারা হিরোকে জিরো বানাতে চায় তারাই জিরো হয়ে গিয়েছে। সেতুমন্ত্রী আমাকে তাচ্ছিল্য করে কথা বলেছেন। তবে একজন মন্ত্রী দেশের নাগরিককে তাচ্ছিল্য করে কথা বলতে পারেন না।’
হিরো আলম বলেন, ‘আমি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আগামীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই, যেখানে সব দল অংশগ্রহণ করবে। সবাই নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে।’
বিএনপি হিরো আলমের পক্ষে কাজ করছে কিনা গণমাধ্যমের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি আমার পক্ষে কাজ করলে ভোটের দিন তারা মাঠেই থাকতো। বিএনপির কোনো লোক আমার সঙ্গে ছিল না। এইসব কিছু লোকের বানানো কথা। শুধু বিএনপির মির্জা ফখরুল স্যার নই, সারা বিশ্ব ও বাংলাদেশ আমার পক্ষে কথা বলেছেন।’
রোবার দুপুরে বগুড়া জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম এর বরাবর হিরো আলম লিখিতভাবে জানান, হিরো আলম বগুড়া-৪ আসনে (কাহালু-নন্দীগ্রাম) স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। ১ ফেব্রুয়ারি এই আসনে ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোট গ্রহণের পর কাহালু-নন্দীগ্রাম এলাকার কিছু ভোট কেন্দ্রের ফলাফল তার কাছে সন্দেহজনক হয়। এজন্য ৪৫টি কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনা করে ফলাফল প্রকাশের আবেদন করেন। হিরো আলম ওই আবেদনে যে সব কেন্দ্রের ফলাফল সন্দেহ হয় সেসব কেন্দ্রের নম্বরও আবেদন পত্রে তুলে ধরেন। এই আসনে মোট কেন্দ্র রয়েছে ১১২টি।
বগুড়া জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, আশরাফুল হোসেন আলম এর একটি আবেদন তার কার্যালয়ে জমা পড়েছে। যদিও নির্বাচন সংক্রান্ত ফলাফলের সকল কাগজপত্র তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুঝিয়ে দেওয়া ফলাফলের কাগজপত্রে কোনো ভুল থাকলে সে বিষয়টি দেখা যেতে পারে। বগুড়া জেলা প্রশাসক আরও বলেন ইভিএম-এ ভোট গণনায় ভুল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।