সৈয়দপুর(নীলফামারী)প্রতিনিধি
রান্নার জন্য ভাতের চাল থেকে এক মুঠো করে চাল জমিয়ে পূজার আয়োজন করেছে নীলফামারীর সৈয়দপুরের হাড়িপাড়ার নারীরা। উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর গ্রামের হাড়িপাড়ার বাঙ্গালী সনাতন ধর্মাবলম্বীর ৩০টি পরিবার বিগত ১৮ বছর থেকে তাদের শারদীয় দূর্গোৎসব এভাবেই পালন করে আসছে ।
আজ শনিবার ষষ্ঠী পূজার দিনে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামটি প্রায় পুরুষ শূন্য। কারণ হাড়িপাড়ার পুরুষদের আয়ের একমাত্র পথ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঢোল বাজানো। প্রতি বছরের মতো এবারেও ওই গ্রামের পুরুষরা বিভিন্ন পূজা মন্ডপে ঢোল বাজাতে গিয়েছেন। ফলে এই গ্রামের পূজা মন্ডপে ঢাক, ঢোল, তাল সবই বাজাচ্ছেন নারীরা। পূজার আরতি থেকে শুরু করে প্রসাদ বিতরণও করছেন তারা। লক্ষণপুর হাড়িপাড়া কালিমন্দির পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি রতন চন্দ্র জানান, এবারে দূর্গা পূজা সম্পন্ন করতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারের অনুদানের ৫০০ কেজি চাল বিক্রি করে ২০ হাজার টাকা পেয়েছি। বাকি টাকা মুঠোর চাল বিক্রি ও বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে তোলা অর্থে যোগান দেয়া হবে। পূজার পরেও টাকার ঘাটতি হলে আবারও মুঠোর চাল জমিয়ে তা পূরণ করার কথা জানান তিনি।
গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ রমনী কান্ত জানান, অর্থের অভাবে দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার করা সম্ভব হয়নি তাদের মন্দিরটি। এরমধ্যেই এবারও সেখানে আয়োজন করা হয়েছে পূজো অনুষ্ঠানের। সামনের সীমানা প্রাচীর না থাকায় অরক্ষিত মন্দিরটি সংস্কার না করায় মন্দিরের দেওয়ালগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অর্থের অভাবে এখনও মন্দিরটি সংস্কার করা যায়নি। এদিকে অর্থের যোগান না হওয়ায় সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবস্থা হয়নি। ফলে অন্যান্য স্থানে জাঁকজমক আয়োজন দেখে পাড়ার শিশু কিশোরদের মন বসছে না পূজায়।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কমিটির সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সভাপতি শিল্পপতি রাজকুমার পোদ্দার রাজু বলেন, ওই পূজামন্ডপে সার্বিক বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। তিনি পিছিয়ে পড়া ওই জনগোষ্ঠির মন্দিরটিতে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। যাতে বিভিন্ন সময়ে উন্নত পরিবেশে তারা পূজা অর্চনা পালন করতে পারেন।