খবর৭১ঃ ভারতে রাষ্ট্রীয় সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয়াদিল্লিতে হযরত নিজামউদ্দিন আউলিয়ার মাজার জিয়ারত করেছেন। স্থানীয় সময় সোমবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিখ্যাত এই সুফিসাধকের মাজারে জিয়ারত এবং মোনাজাত করেন।
এর আগে সোমবার সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে নয়াদিল্লি পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এরপর তাঁকে মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হয় আইটিসি মৌর্য হোটেলে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র টুইটে লিখেছেন, ‘রাষ্ট্রীয় সফরে নয়াদিল্লিতে আসা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রেলওয়ে ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী দর্শনা বিক্রম জারদোশ উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফর দুই দেশের বহুমুখী সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।’
তিন বছর পর চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত গেলেন প্রধানমন্ত্রী। তার এ দ্বিপক্ষীয় সফরে ব্যবসা-বাণিজ্য, জ্বালানি, অভিন্ন নদ-নদীর পানি বণ্টন ও রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহযোগিতার বিষয়গুলো আলোচনায় বেশি গুরুত্ব পাবে। সফরে দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হবে।
৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানানো হবে। রাষ্ট্রপতি ভবনে তাকে প্রদান করা হবে গার্ড অব অনার। এদিন হায়দরাবাদ হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিপক্ষীয় আলোচনা এবং ওয়ান টু ওয়ান বৈঠক করবেন।
ভারত-বাংলাদেশের ‘বিশেষ’সম্পর্কের যে মাত্রা, দুই প্রধানমন্ত্রীর শীর্ষ বৈঠকের পর তা আরও নতুন মাত্রা পাবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশের কূটনীতিকদের অনেকেই। অনেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফরকে নতুন সম্ভাবনার শুভসূচনা হিসেবে মনে করছেন।
দুই দেশের কূটনৈতিক সূত্র বলছে, জ্বালানি, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ, পানিবণ্টন ও সংযুক্তির মতো বিষয়গুলো এবার গুরুত্ব পাবে। এর পাশাপাশি নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা অব্যাহত রেখে কীভাবে তা আরও বিস্তৃত করা যায়, তা নিয়ে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীরা আলোচনা করবেন।
ঢাকা ও দিল্লির কুটনীতিকরা বলছেন, এই বৈঠকের পর ঢাকা-দিল্লির বন্ধুত্ব ও সম্পর্কের বিশেষ মাত্রা অনন্য উচ্চতায় পৌঁছার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। শেখ হাসিনার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এই সফর নিয়ে ইতিমধ্যে সরগরম ভারতের গণমাধ্যম। উভয় দেশের সাধারণ মানুষেরও আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে শেখ হাসিনার এই সফর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সফর থেকে একটি টেকসই ও শুভ ফল পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দুই দেশের।
ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, এই সফরে দুই দেশের মধ্যে ৫টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই ও ২টি সমঝোতা স্মারক নবায়ন হবে। দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হবে, কোন কোন চুক্তি হবে, ভারত কী নেবে আর কী দেবে, কী হচ্ছে অভিন্ন পানি বণ্টন প্রক্রিয়া, তিস্তার বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া মিলবে কি না-এসব নিয়ে সাধারণের আগ্রহ ব্যাপক।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে চার দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে যান। তার এ সফরে ব্যবসা-বাণিজ্য, জ্বালানি, অভিন্ন নদ-নদীর পানি বণ্টন ও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা আলোচ্যসূচির শীর্ষে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।