উজ্জ্বল রায়, নড়াইল থেকে: িসম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে বিরোধের জের ধরে কালিয়ায় এক কৃষক দম্পতিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে চাঁচুড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌরুত মোল্যা ও তার সহযোগিরা।
শনিবার (১৯ মার্চ) সকাল সাত টার দিকে উপজেলার চাঁচুড়ী গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কৃষক ও তার অন্তঃস্বত্তা স্ত্রীকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে আহতদেরকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।আহতরা হলেন চাঁচুড়ী গ্রামের প্রয়াত সিদ্দিক মোল্যার ছেলে জান্নাত মোল্যা (৪৫) ও তার স্ত্রী শীলা বেগম (৩৫)। এ ব্যাপারে তৌরুত মোল্যা বলেন,‘একটি তুচ্ছ ঘটনায় পারিবারিক বিরোধে সংঘর্ষ বাধলে আমি সেখানে ঠেকাতে গিয়েছিলাম মাত্র। এক্ষেত্রে আমি কোন পক্ষাবলম্বন কিংবা হামলা করিনি।’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,গত বছর ২৮ নভেম্বর উপজেলার চাঁচুড়ী ইউপি নির্বাচনে তৌরুত মোল্যা বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। ওই নির্বাচনে জান্নাত মোল্যা তৌরুত মোল্যার প্রতিপক্ষ প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন। সেই বিরোধের জের ধরে শনিবার সকাল ৭টার দিকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জান্নাত মোল্যার বসত বাড়িতে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তৌরুত মোল্যা, রেজওয়ান মোল্যা, আসলাম মোল্যা, সেকেন মোল্যা,মুন্না মোল্যা ও আব্দুল্লাহ মোল্যাসহ একদল দুর্বৃত্ত ধারালো অস্ত্র নিয়ে জান্নাত মোল্যাকে ধাওয়া দেয়। এ সময় স্বামীকে রক্ষায় স্ত্রী শীলা বেগম এগিয়ে গেলে তাকে কোপানো শুরু করে। তখন জান্নাত মোল্যা স্ত্রীকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা তাকেও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এক পর্যায়ে জান্নাত মোল্যার স্ত্রী শীলা বেগমের মাথা, বাম হাত ও তলপেটে গুরুতর কাটা জখম হয়। এছাড়া জান্নাতের মাথা, কাঁধ ও হাতে মারাত্মক জখম হয়। স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে নড়াইল সদর ও পরে খুমেক হাসপাতালে পাঠায়।
জান্নাত মোল্যা অভিযোগ করে বলেন,‘গত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌরুত মোল্যার বিরোধিতা করার পর থেকে প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা ও তার লোকজন দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ওপর নানাভাবে অন্যায়-অত্যাচার করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তুচ্ছ ঘটনায় শনিবার সকালে তৌরুত মোল্যার নেতৃত্বে হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আমার অন্তঃস্বত্তা স্ত্রী ও আমি রক্তাক্ত জখম হয়েছি।’
কালিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রতনুজ্জামান বলেন,‘ঘটনার পরপরই হামলাকারীরা পালিয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হামলায় জড়িতদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতিও চলছে।’