খবর৭১ঃ কয়েক মাস ধরেই বাড়ছে ভোগ্যপণ্যের মূল্য। চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, আলু, পেঁয়াজ, চিনিসহ প্রায় সব পণ্যের দর ঊর্ধ্বমুখী হলেও ভোজ্যতেল নিয়ে রীতিমতো বেসামাল অবস্থা।
সয়াবিনের দাম একেক দোকানে একেক রকম। খুচরা বাজারে বৃহস্পতিবার প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন কিনতে ক্রেতাকে ২০০ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে হয়েছে। অনেকেই আবার সয়াবিন তেল কিনতে গিয়ে ফিরে গেছেন। খোলা সয়াবিন তেল তো বাজার থেকে উধাও। ক্রেতারা বলছেন, ভাই আমরা সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়ে গেছি। শক্ত হাতে সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।
বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার যুগান্তরকে বলেন, দেশে এখন বিপুল পরিমাণ তেল আছে। খোলা তেলও রয়েছে। কিন্তু বাজারে বিক্রেতারা খোলা তেল সরিয়ে রেখেছে। কে কোথায় সরিয়েছে, তার তথ্যপ্রমাণ আমাদের কাছে এসেছে। আমরা দ্রুত অভিযান পরিচালনা করব। সেই মজুত করা খোলা তেল আমরা বাজারে সরবরাহ করব। পাশাপাশি অসাধুদের আইনের আওতায় আনব। সেক্ষেত্রে আমরা এবার জেলেও পাঠাব। ইতোমধ্যেই আমরা বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছি। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
বুধবার রাত থেকেই খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলের সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। বৃহস্পতিবার খুচরা বাজারে গিয়ে একই চিত্র দেখা গেল। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন কিনতে ক্রেতাকে ২০০ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে হয়েছে। খোলা সয়াবিন তো মিলছেই না। চালের বাজারও বাড়তি। এক কেজি চাল কিনতে ক্রেতাকে ৫০-৭০ টাকা গুনতে হচ্ছে। ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি। চিনির কেজিও ৮০ টাকার উপরে। সরবরাহ ভালো থাকলেও পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতার খরচ হয়েছে সর্বোচ্চ ৬০ টাকা।
যে গরুর মাংস দেড় মাস আগেও ৬০০ টাকায় বিক্রি হতো, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৬৫০-৬৬০ টাকায়। ক্রেতাকে বাধ্য হয়ে কম খেয়ে সমন্বয় করতে হচ্ছে। পরিবারের বাজেটেও করতে হচ্ছে কাটছাঁট। মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষ নিদারুণ কষ্টে আছেন।
বৃহস্পতিবার সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার পণ্য মূল্য প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ দাম বেড়েছে, পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিনে ৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ দাম বেড়েছে।
পাশাপাশি খোলা পামঅয়েল লিটার প্রতি ১৩ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ দাম বেড়েছে। পাম অয়েল সুপারে লিটারে দাম বেড়েছে ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। পাশাপাশি মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি চাল ৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি আলু কিনতে ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেশি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১০০ শতাংশ বেড়েছে।
গরুর মাংস কিনতে ক্রেতার ৩ দশমিক ৩৯ ও ব্রয়লার মুরগি কিনতে ক্রেতার ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ বেশি টাকা ব্যয় হচ্ছে। পাশাপাশি চিনি কেজি প্রতি ৩ দশমিক ৩১ শতাংশ দাম বেড়েছে। খোলা সয়াবিন নিয়ে টিসিবির বাজার পণ্য মূল্য প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার তারা রাজধানীর খুচরা বাজারে খোলা তেল পায়নি। তাই তারা দামও উল্লেখ করতে পারেনি।