উজ্জ্বল রায়, নড়াইল থেকে : নড়াইল জেলায় সর্বমোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬৯৭টি। এর মধ্যে ৪৫৩ টিতেই নেই শহিদ মিনার! কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে আগে শহিদ মিনার থাকলেও সেগুলো ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে, কিন্তু শহিদ মিনার আর স্থাপন করা হয়নি। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম ছায়েদুর রহমান বলেন, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই সেসব প্রতিষ্ঠানের তালিকা সংশ্লিষ্ট অধিদফতরে প্রতিবছরই পাঠানো হয়। তবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর থেকে প্রতিবছর ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার তৈরি করে দেওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া স্থানীয় সহায়তা এবং জেলা পরিষদ ও এলজিইডি অফিস থেকেও প্রতি বছর দুয়েকটি করে শহিদ মিনার তৈরি হচ্ছে বলেও জানান তিনি। নড়াইল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী অরুনাভ রায় জানান, নিয়মে রয়েছে যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেরামত ও সংস্কার কাজের বরাদ্দ আসে সেসব প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা যদি শহিদ মিনার তৈরি করে দিতে বলেন, তাহলে আমরা নির্মাণ করে দিই। তবে তারা যদি না চান, তাহলে আমরা করতে পারি না। গত ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নড়াইলে যোগদানের পর কালিয়ায় একটি মাধ্যমিক স্কুলে নতুন শহিদ মিনার নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২০২টি। এরমধ্যে ১১৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার আছে, নেই ৮৫ প্রতিষ্ঠানে। এরমধ্যে ৪৫টি কামিল, ফাজিল, আলিম ও দাখিল মাদরাসার একটিতেও শহিদ মিনার নেই। শহিদ মিনার না থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকায় ৯টি উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি কলেজও রয়েছে। জেলায় ৪৯৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে শহিদ মিনার রয়েছে ১২৭টিতে এবং ৩৬৮টিতে নেই। নড়াইলের কৃতিসন্তান বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের নামে বীরশ্রেষ্ঠের জন্মভূমি সদরের চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের নূর মোহাম্মদ নগরে একটি কলেজ এবং একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকলেও দুটির একটিতেও শহিদ মিনার নেই।
এ ব্যাপারে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ কলেজের অধ্যক্ষ প্রনব কান্তি অধিকারী বলেন, শহিদ মিনার করার জন্য গত দুই বছর পূর্বে তৎকালীন জেলা প্রাশাসক এবং জেলা পরিষদের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু বিষয়টি আর এগোয়নি। এছাড়া শহিদ মিনার করার জন্য আমাদের কোনো ফান্ডও নেই যে নিজস্ব অর্থায়নে মিনার নির্মাণ করব।