খবর৭১ঃ ভারতীয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকর মারা গেছেন। কিংবদন্তি এ শিল্পী জীবনযুদ্ধে হার মানলেন ৯২ বছর বয়সে। রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
করোনাভাইরাস ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় গত ৮ জানুয়ারি মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় লতা মঙ্গেশকরকে। শনিবার থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। এরপর ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয় তাকে। সেখান থেকে না ফেরার পথে পাড়ি দিলেন ভারতের প্রখ্যাত এই সংগীতশিল্পী।
লতা মঙ্গেশকর ১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মধ্যপ্রদেশের ইন্ডোরে শাস্ত্রীয় সংগীত ব্যক্তিত্ব ও থিয়েটার শিল্পী পণ্ডিত দীননাথ মঙ্গেশকর ও শেবান্তির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪২ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে একজন পেশাগত কণ্ঠশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। প্রথমে মারাঠি ছবিতে প্লে-ব্যাক করেন। ১৯৪৮ সালে মজবুর সিনেমায় প্রথম হিন্দি গান করেন।
তিনি ৩৫টিরও বেশি ভারতীয় ভাষায় গান গেয়েছিলেন। ৭৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লতা মঙ্গেশকর তার জাদুকরি কণ্ঠ দিয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রেখেছিলেন।
কিশোর কুমারের সঙ্গে লতা মঙ্গেশকার
১৯৭৪ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত বিশ্বে সর্বাধিক গান রেকর্ড করার জন্য গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম ওঠে তার। এই সময়ে তিনি ২০টি ভাষায় ২৫০০০ এর বেশি গানে কণ্ঠ দেন। এর মধ্যে ২০০-এর বেশি বাংলা গান গেয়েছেন।
লতা মঙ্গেশকর ভারতরত্ন, পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণসহ অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন
লতা মঙ্গেশকর ভারতরত্ন, পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণসহ অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন। পেয়েছেন দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার, তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ফিল্মফেয়ার চারবার সেরা নারী প্লেব্যাক, ১৯৯৩ সালে আজীবন সম্মাননা এবং ১৯৯৪ ও ২০০৪ সালে দুইবার ফিল্মফেয়ার বিশেষ পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া ১২ বার বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্টস’ অ্যাসোসিয়েশন পুরস্কার।
লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যু সংবাদ পেতেই শোক প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতি অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। সকলেই বলছেন, ভারতীয় সংগীতের জগতের এ এক যুগের অবসান। এই ক্ষতি অপূরণীয়।