চীন থেকে বাংলাদেশের ঋণগ্রহণ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, চীনা ঋণ নিয়ে অনেকেই অহেতুক ভয় দেখাচ্ছে। চীনা ঋণ নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই।
শনিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘সেন্টার ফর নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশি’ আয়োজিত ‘ব্রান্ডিং বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, অবশ্যই এগুলো অপপ্রচার। বিদেশিরা বলেন, বাংলাদেশ নাকি চীনের লেজুর হয়ে যাচ্ছে। কারণটা তারা বলেন, বাংলাদেশ চীনের ডেথ ট্র্যাপে পড়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কার মতো। ডেথ ট্র্যাপ হতে হলে ৪০ শতাংশ ঋণ নিতে হবে। আমাদের দেশের সর্বমোট ঋণ হলো ১৫ শতাংশের কিছু বেশি। ১৬ শতাংশের মতো। এখনো অনেক দূর। আর যদি দেশগুলো দেখেন, প্রতিষ্ঠান দেখেন, আমরা সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং আইএমএফ থেকে। প্রায় ৭৩ শতাংশের বেশি। পরবর্তী সবচেয়ে বেশি যে দেশ থেকে আমরা ঋণ নিয়েছি সেটা হলো জাপান। চীন তো ধারেকাছেই নেই, ৫ শতাংশের কিছু বেশি।
তিনি বলেন, আমাদের কিছু জ্ঞানপাপী বলে বেড়ান- বাংলাদেশ সতর্ক হও। বলা হয়, আমরা চীনের লেজুর হয়ে যাচ্ছি। কারণ আমাদের নাকি ৮০ শতাংশ মিলিটারি ইক্যুইপমেন্ট চীন থেকে কেনা। এটা একটা ডাহা মিথ্যা কথা। আমরা যা কিনি সব দেশ থেকেই কিনি। সব জায়গা থেকে কিছু কিছু করে কিনি, ভারতও আমাদের দিতে চাচ্ছে। আমাদের আর্মিরা জানে কী কিনবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আরেকটি কথা উঠেছে- চীন আমাদের তিস্তা ব্যারেজের জন্য টাকা দিচ্ছে। তিস্তা ব্যারেজ একটা প্রকল্প, ১৯৮৮ সালে যখন বড় রকমের বন্যা হয় তখন ফ্রেন্স সরকার এসেছিল, বাংলাদেশে বন্যা কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় তার জন্য তারা পরিকল্পনা করেছিলেন। ৫-৬ বিলিয়ন ডলার। অত টাকা কেউ দেয়নি। তার একটি অংশ ছিল তিস্তা ব্যারেজ। এখন চীন নাকি উৎসাহ দেখিয়েছে, আমাদের বলেনি, তারা নাকি পয়সা দিতে চায়। আর যায় কোথায়, গেল গেল বাংলাদেশ চীন হয়ে গেল! এ ধরনের একটি ভয় তৈরি করা হচ্ছে।
ড. মোমেন বলেন, আমাদের অনেক জ্ঞানপাপী এই ভয়টা তৈরি করছেন। তার ফলে এসব শুনে অনেকেই বলছে, সত্যি সত্যিই কিছু দুর্ঘটনা ঘটছে।