দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে আজ সোমবার ও আগামীকাল জাপানি মায়ের জিম্মায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। কিন্তু আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল রোববার রাত ১০টার মধ্যে দুই শিশুকে মায়ের কাছে হস্তান্তর না করায় তাদের বাবার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করে আবেদন জানানো হয়েছে।
আদালত শিশু দুটিকে নিয়ে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে আপিল বিভাগে হাজির হতে তাদের বাবাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে গতকাল রোববার দুপুরে জাপানি দুই শিশু বাংলাদেশি বাবার কাছে থাকবেন উল্লেখ করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা মায়ের আপিলের ওপর আংশিক শুনানি করেন।
পরে আদালত দুই শিশুকে দুদিনের জন্য মায়ের রাখতে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। এদিন রাত ১০টার মধ্যে শিশু দুটিকে তাদের মায়ের হেফাজতে দিতে বাবার প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়।
একইসঙ্গে আগামী ১৫ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। তবে সে আদেশ প্রতিপালন না করায় শিশুদের বাবার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন জানান শিশুদের মা ডা. নাকানো এরিকো।
৫ ডিসেম্বর দুই শিশুকে নিজের জিম্মায় নিতে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন জাপানি মা নাকানো এরিকো।
এর আগে ২১ নভেম্বর দুই শিশু বাংলাদেশে তাদের বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকবে বলে রায় দেন হাইকোর্ট।
তবে রায়ে বলা হয়, জাপান থেকে এসে মা বছরে তিনবার ১০ দিন করে দুই সন্তানের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে পারবেন। জাপানি মায়ের আসা-যাওয়া ও থাকা-খাওয়ার সব খরচ বাবা ইমরান শরীফকে বহন করতে হবে। ছুটির দিনে অন্তত দুইবার বাবা সন্তানদের মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেবেন। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালত নির্দেশনা দেন, গত কয়েক মাস বাংলাদেশে অবস্থান ও যাতায়াত খরচ বাবদ শিশুদের মা নাকানো এরিকোকে ১০ লাখ টাকা দেবেন বাবা ইমরান শরীফ। সাত দিনের মধ্যে তাকে এ অর্থ দিতে বলা হয়।
রায়ে আদালত বলেন, রিটটি চলমান থাকবে। রিটটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদেশ প্রতিপালিত না হলে বা অন্য কোনো আদেশের জন্য আদালতে উভয় পক্ষ আসতে পারবে। সংশ্লিষ্ট সমাজসেবা কর্মকর্তা শিশুদের দেখভাল অব্যাহত রাখবে। প্রতি তিন মাস অন্তর শিশুদের বিষয়ে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দিতে হবে। জাপানে থাকা ছোট মেয়ে হেনাকে হাইকোর্টে হাজির করানোর নির্দেশনা চেয়ে বাবা ইমরান শরীফের করা রিট খারিজ করে দেন আদালত।
গত ১ নভেম্বর জাপানি দুই শিশু বাংলাদেশে তাদের বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকবেন না মা নাকানো এরিকোর সঙ্গে জাপানে চলে যাবেন, সে বিষয়ে শুনানি শেষ হয়।