খবর৭১ঃ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে সরকারের কাছে আবারও আবেদন করেছে তার পরিবার। খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর ফের চিঠি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
খালেদা জিয়ার পরিবারের এক সদস্য বিবিসিকে বলেছেন, চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন, সেজন্য তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নতুন করে আবেদন করেছেন।
ছয়দিনের ব্যবধানে খালেদা জিয়াকে আবার ঢাকায় বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তির পর রোববার রাত থেকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে সিসিইউতে রাখা হয়েছে।
কয়েকদিন আগে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার অনুমতি চেয়ে খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।
তার বোন সেলিমা ইসলাম বিবিসিকে বলেছেন, খালেদা জিয়ার এখন বিদেশে চিকিৎসা প্রয়োজন-চিকিৎসকরা এখন এই একটাই পরামর্শ দিচ্ছেন।
সেজন্য তাদের ভাইবোনদের পক্ষ থেকে আবারও সরকারের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
সেলিমা ইসলাম বলেন, ‘এটাই আমাদের আবেদন সরকারের কাছে যে তাকে (খালেদা জিয়া) চিকিৎসার জন্য যাওয়ার অনুমতি ওনারা (সরকার) যেন দেয়।’
যত দ্রুত সম্ভব খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি।
কোন দেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে চায় পরিবার-এই প্রশ্নে সেলিমা ইসলাম বিবিসিকে জানান, সিঙ্গাপুর কাছে হবে এবং সেজন্য সিঙ্গাপুরকে তারা অগ্রাধিকার দেন।
তবে যে দেশেই অনুমতি মিলবে, সেখানেই তারা নেবেন বলে জানিয়েছেন সেলিনা ইসলাম।
৭৬ বছর বয়সি সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বহু বছর ধরে আর্থ্রারাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। অসুস্থতার জন্য টানা ২৬ দিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ৭ নভেম্বর বাসায় ফেরেন তিনি।
এর আগে এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন খালেদা জিয়া। পরে করোনা পরবর্তী জটিলতায় ২৭ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি হন। সে সময় এক মাসের বেশি সময় হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি ছিলেন। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে ১৯ জুন বাসায় ফেরেন।
পরে করোনার টিকা নিতে তিনি দুদফায় মহাখালীর শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে যান।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে খালেদা জিয়া ২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান। করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে গত বছরের ২৫ মার্চ সরকার শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়।
এ পর্যন্ত তিন দফায় খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। তবে বিএনপির নেতারা খালেদা জিয়ার শর্তসাপেক্ষে এ মুক্তিকে ‘গৃহবন্দি’ বলছেন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার আবেদন করা হলেও সরকার তা নাকচ করে দেয়। তাকে দেশে থেকেই চিকিৎসা নিতে হবে বলে শর্তও দেওয়া হয়েছে।