খবর৭১ঃ জাতীয় সংসদে ডিজেলের দাম বাড়ানোর সমালোচনা করেছেন প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির দুই সংসদ সদস্য। লিটারে ডিজেলের দাম ১৫ টাকা করে বাড়ানোর প্রভাব সবকিছুতে পড়েছে বলে মনে করেন তারা। জনগণকে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে ডিজেলের ভর্তুকি নিয়ে বিকল্প ভাবতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
রবিবার বিকালে সংসদ অধিবেশনের শুরুর দিনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু প্রথমে প্রতিবাদ করেন। এরপর দলটির আরেক সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীও একই বিষয়ে প্রতিবাদ জানান।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘কোভিড মোকাবিলা করে মানুষ যখন ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে ঠিক সেই সময় হঠাৎ করে ডিজেলের তেলের দাম বাড়ানো হলো। বলা নেই, কওয়া নেই কোনো ধরনের আগাম নোটিশ না দিয়ে জ্বালানি তেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানো হলো। গত কয়েক বছরে জ্বালানি তেলের দাম একসঙ্গে এত পরিমাণে বাড়ানো হয়নি।’
চুন্নু বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ডিজেলের দাম বাড়ানো হলো। এর পরপরই শুরু হলো পরিবহন ধর্মঘট। অথচ পরের দিন শুক্র ও শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিসহ বিভিন্ন চাকুরির পরীক্ষা ছিল। এতে করে পরীক্ষার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হলো। ডিজেলের দাম বাড়ার পর বাসভাড়া ২৭ শতাংশ, নৌযানের ভাড়া ৩৭ শতাংশ বাড়ানো হছে। যেটা তেলের দাম বৃদ্ধির তুলনায় অনেক বেশি। জানি না এখানে কেন সমন্বয় নেই।’
পয়েন্ট অব অর্ডারে তিনি বলেন, ‘বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম কমার কারণে পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ৭৫ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। বর্তমান সরকার নির্বাচিত সরকার। জনগণের কথা চিন্তা করলে কোভিডের এই অবস্থার মধ্যে হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের দাম না বাড়িয়ে কি বিকল্প ব্যবস্থা করা যেত না? এমনিতেই বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যে তেলের কারণে আরও অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়ছে।’
প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘আল্লাহর ওয়াস্তে আপনি দেশের মানুষের কথা ভেবে জ্বালানি তেলের দাম কমান। না হলে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। মানুষকে বিপজ্জনক অবস্থা থেকে মুক্তি দেন।’
পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, ‘ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি সাধারণ মানুষকে চরমভাবে আঘাত করেছে। দ্রব্যমূল্যও বেড়ে গেছে। প্রতিবেশী দেশ স্পর্শকাতর এই জ্বালানির দাম না বাড়িয়ে ঠিক রেখেছে। আমাদের সরকার ইচ্ছা করলে এটা করতে পারে।’
আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমে যায় তখন দেশে দাম কমানো হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অজুহাত দিয়ে বাড়ানো হলে সেটা কত শতাংশ হতে পারে। আমাদের চিন্তা করা উচিত, আমরা কী পরিমাণ বাড়াতে পারি। বৃদ্ধির পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে গেছে। এ বিষয় প্রধানমন্ত্রীসহ ক্যাবিনেটের নতুন করে চিন্তা করা উচিত। কারণ জনস্বার্থ অগ্রাধিকার।’