কাজী শাহ্ আলম, লালমনিরহাট প্রতিনিধি : লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নে ভূমিহীনরা খাস জমির বন্দোবস্ত না পাওয়ায় ও প্রভাবশালীরা কবুলিয়ত নিয়ে ফসলি এবং খাসজমির বসতভিটা থেকে তাঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভূমিহীন পাঁচ কৃষক পরিবার।
রবিবার(৩১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২ টায় ওই ইউনিয়নের ঝালঙ্গী গ্রামের ভূমিহীন কৃষকদের বসতবাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন-ভূমিহীন খোরশেদ আলীর(৭০) মেয়ে সাহেরা খাতুন (৩০)।
ওই ইউনিয়নের মৌজা-ঝালঙ্গী, জেএল নং-০১, এসএ খতিয়ান নং-১৭১, বিআরএস খতিয়ান নং-৬১ অনুযায়ী মোট সরকারি ১১.৩৭ একর জমির এসএ মালিক বানীকান্ত নিয়োগী গং স্বপরিবারে নিরুদ্দেশ থাকায় সরকার এসএ অ্যান্ড অ্যাক্টের ৯২(ক) ধারা মোতাবেক জমি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ০১/৯৫-৯৬ মিস কেসের আওতায় ২২ জন ভূমিহীন পরিবারকে প্রথমে একসনা মেয়াদে লিজ প্রদান করে। বর্তমানে ওই জমিতে ১২ ঘর পরিবার রয়েছে।’
বক্তব্যে দাবি করা হয়- ভূমিহীন দরিদ্র ৫ পরিবার দীর্ঘ ৩১ বছর থেকে ওই জমিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করে কবুলিয়তের জন্য উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে একাধিকবার আবেদন করা হয়। কিন্তু অদৃশ্যকারণে পাঁচ পরিবারের আবেদনপত্র গুলো গায়েব হয়ে যায়। পরবর্তীতে ওই পাঁচ পরিবার একই এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে ছক্কর আলীকে খাস জমির কবুলিয়ত দলিল করে নিতে উপজেলা ভূমি অফিসে যোগাযোগ করার দায়িত্ব দেন। ছক্কর আলী জমির বন্দোবস্ত করে দেওয়ার কথা বলে ওই পাঁচ পরিবারের নিকট বিভিন্ন সময়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে কবুলিয়তের ব্যবস্থা না করে কতিপয় ভূমি কর্মকর্তার যোগসাজসে টাকার বিনিময়ে ছক্কর আলীর মা কালীগঞ্জ উপজেলার চাপারহাটের আয়শা বেগম, শ্রীরামপুর ইউনিয়নের বেলেরবাড়ি গ্রামের ভাজতি জামাই আব্দুর রশিদ, ভগ্নিপতি সুরুজ, ভাগিনা তোতাসহ প্রত্যেকের নামে ৫০ শতক করে জমির কবুলিয়ত দলিল করে নেয়। এভাবে তিনি (ছক্কর আলী গং) প্রায় ৭ একর জমির কবুলিয়ত দলিল করে নেন। এরপর থেকে ওই পাঁচ পরিবারের বসতভিটাসহ ফসলি জমি দখলের জন্য উঠেপড়ে লাগে ও আদালতে হয়রানি মূলক মামলা দেন ছক্কর আলী গং। সংবাদ সম্মেলনে আরও দাবি করা হয়, ছক্কর আলীর স্বজনেরা ধনাঢ্য, ভূমিহীন না হয়েও নিজেদেরকে ভূমিহীন উল্লেখ করে ২০১৮ সালে সরকারি খাস জমির কবুলিয়ত দলিল করে নেয়। ওই কবুলিয়ত দলিল গুলো লালমনিরহাট অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নিকট বাতিলের আবেদন করে ভূমিহীন পরিবার গুলে। আবেদনপত্রে লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন সুপারিশ করেন। এরপর ওই খাস জমিতে বসবাসরত খোরশেদ আলী, বিল্লাল হোসেন, আবুল কাশেম, আজিজুল ইসলাম, আলম হোসেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের নিকট ঘটনা তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও দাবি করা হয় ছক্কর আলী ও তাঁর দলবল বসতবাড়ি, ধান খেত দখলে নিতে ভয়ভীতি, হুমকি দিচ্ছে। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ ও সাহায্য কামনা করছি।
এ ব্যাপারে ছক্কর আলী বলেন, ‘আত্মীয়-স্বজনের নামে জমি কবুলিয়তের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ৫ পরিবার সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। সরকার আমাদেরকে পক্ষভুক্ত করেছে। আমরা সরকারের পক্ষে থেকে মামলা চালাইছি। এজন্য সরকার আমাদেরকে জমি কবুলিয়ত করে দিয়েছে।’