খবর৭১ঃ ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউকের প্লট বরাদ্দ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এসকে সিনহা) বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার মামলাটি করেন বলে জানিয়েছেন দুদক সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
দুদক সচিব বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তার নিজ নামে রাজউক হতে উত্তরা আবাসিক এলাকায় একটি প্লট বরাদ্দ পান। পরবর্তীতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে ও প্রতারণার মাধ্যমে তার ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহার নামে রাজউক পূর্বাচল প্রকল্পে তিন কাঠার আরও প্লটের জন্য আবেদন করেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভাইয়ের নামে আবেদন করা ওই তিনকাঠার প্লট বরাদ্দ নেন। পরে তিন কাঠার প্লটটিকে আবারও প্রভাব খাটিয়ে পাঁচ কাঠার প্লটে রুপান্তর করেন।
দুদকের অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, এসকে সিনহা ভাইয়ের নামে অবৈধভাবে বরাদ্দ নেওয়া পূর্বাচলের প্লটটিও পুনরায় নিজ ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে পূর্বাচল থেকে প্লট স্থানান্তর করে উত্তরার সেক্টর-৪ এ রাজউক থেকে অনুমোদন করান। আর প্লটের যাবতীয় অর্থ মোট ৭৫ লক্ষ টাকা নিজেই পরিশোধ করেন। পরে ওই প্লটে ৯তলা ভবন নির্মাণ করেন।
দুদকের অনুসন্ধানকালে নিরপেক্ষ প্রকৌশলীর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উত্তরা আবাসিক এলাকায় ভবনের নির্মাণ ব্যয় ৬ কোটি ৩১ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকা। এছাড়া প্লটের মূল্য হিসেবে রাজউকে পরিশোধ করা হয় ৭৫ লাখ টাকা।
এসকে সিনহা রাজউকের যে কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে প্লট জালিয়াতি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নে দুদক সচিব বলেন, তদন্ত করে তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, এসকে সিনহা অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে নিজ ভাই ও নিজের আত্মীয়ের নামে-বেনামে সম্পদ অর্জন করেছেন, যার কোনো বৈধ উৎস নেই বা তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গিতপূর্ণ। উক্ত সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে অবৈধ পন্থায় অর্জিত অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তির হিসাবের মাধ্যমে স্থানান্তর, রুপান্তর ও হস্তান্তর করেন।
অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন ও তা বিভিন্ন ব্যক্তির হিসাবের মাধ্যমে স্থানান্তর, রুপান্তর ও হস্তান্তর করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২), (৩) ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করে।