খবর৭১ঃ করোনাভাইরাসের এই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য আইন প্রণয়ন করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা জানান।
আনিসুল হক বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে সংবিধানে যে আইনের কথা বলা হয়েছে তা করা হবে না- আমি এমন কথা বলছি না। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতি ও সবকিছু মিলিয়ে যেহেতু বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সময় ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয়ে যাবে, সেহেতু এখন এ আইন করাটা সম্ভব না।
এর আগে গত ৪ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রাষ্ট্রপতি একটা সার্চ কমিটি করবেন। তার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পরদিনই প্রেস ব্রিফিং ডেকে প্রতিক্রিয়া দেয় বিএনপি। সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এটা জনগণের সঙ্গে ধোঁকাবাজি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস (ইউল্যাব) ক্যাম্পাসে ‘স্মরণে শেখ মুজিব: সহস্রাব্দের শ্রেষ্ঠ বাঙালি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমেই নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন আনিসুল হক।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী তার সংবাদ সম্মেলনে পরিষ্কার করে বলেছেন- সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন ইসি গঠন করা হবে। যখন সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তখন রাষ্ট্রপতি সব রাজনৈতিক দলের অভিমত নিয়েছিলেন। সবাই রাজি হওয়ার পরই সার্চ কমিটির গেজেট হয়। যদিও সার্চ কমিটির গেজেট আইন নয়, কিন্তু এটা যেহেতু সবার কনসেন্স নিয়ে করা হয় ও রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তে হয়েছিল, তাই সেটা আইনের কাছাকাছি। আমি এখনো বলছি এটা আইন নয়, আইনের কাছাকাছি।
এর আগে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময় নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করতেন, নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন। তিনি বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু সবই বলেছেন। কিন্তু আইনের মধ্যে থেকে। জনগণের মেন্ডেট যখন পেয়েছিলেন তখনই কেবল তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
আনিসুল বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর আমাদের এমন একটা সময় এসেছিল, যখন সরকারি অর্থায়নে বঙ্গবন্ধুকে ভুলে যাওয়ার একটা প্রচেষ্টা চলছিল। আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে ‘কারাগারের রোজনামচা’ উপহার দিয়েছেন, ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ প্রকাশ হয়েছে বলে আমরা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে এত জানার সুযোগ পাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, ইউল্যাবের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ এমপি, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. সামসাদ মর্তূজা, ইউল্যাব ট্রাস্টি বোর্ডের বিশেষ উপদেষ্টা অধ্যাপক ইমরান রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।