খবর৭১ঃ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ মামলায় প্রধান দুই আসামি দেলোয়ার হোসেন দেলু ও আবুল কালামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং উভয়কে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত।
সোমবার (৪ অক্টোবর) বেলা সোয়া ১১টায় আসামি দেলোয়ার হোসেন দেলু ও মোহাম্মদ আলী প্রকাশ আবু কালামের উপস্থিতিতে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক জয়নাল আবেদিন মামলার রায় প্রদান করেন। ১৩ কার্যদিবসে মামলা সমাপ্ত করা হলো। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ লাবলু জানান, আলোচিত গৃহবধূ ধর্ষণ মামলাটিতে আমরা আদালতে সাক্ষী উপস্থাপন, জেরা ও জবানবন্দি সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ১২ জন ও আসামিপক্ষে ৩ জন সাফাই সাক্ষী প্রদান করেন। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন আদালত। পরে গত ১৮ আগস্ট আসামিদের উপস্থিতিতে বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ লাবলু, বাদীপক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন এবং আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বাদল।
মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় গত ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর নির্যাতিতা ওই নারী বাদী হয়ে দেলোয়ার হোসেন ও আবু কালামকে আসামি করে বেগমগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় অভিযুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরবর্তীতে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) স্থানান্তর করা হয়।
গত ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারীর আগের স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে তার বাবার বাড়ি একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে এসে তাদের ঘরে ঢুকেন। বিষয়টি দেখতে পেয়ে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন দেলু রাত ১০টার দিকে লোকজন নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে পর পুরুষের সঙ্গে অনৈতিক কাজ করছে-এমন অভিযোগ তোলেন এবং ওই গৃহবধূকে কুপ্রস্তাব দেন। তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূকে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে তাকে পিটিয়ে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করা হয়।
গত বছরের ৪ অক্টোবর দুপুরে নির্যাতনের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলায় তথা দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে এ ঘটনায় নির্যাতিতার দায়ের করা নির্যাতন, ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলা অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।