শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল প্রতিনিধি : ভারতে পাঁচার হওয়া ১২ তরুণী বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে স্বদেশে ফিরে এসেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতের প্রেটাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদেরকে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
জানা যায়, স্বদেশে ফিরে আসারা বিভিন্ন সময়ে দালালের প্রলোভনে পড়ে ভারতে যায়। সেখানে গিয়ে পুলিশের কাছে আটক হলে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। পরে কারাগার থেকে সেদেশের কয়েকটি বেসরকারী এনজিও সংস্থা তাদেরকে ছাড়িয়ে নিয়ে নিজেদের শেল্টার হোমে রাখে। তারপর দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের চিঠি চালাচালির এক পর্যায়ে দু’দেশের সরকারের দেওয়া বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে স্বদেশে ফিরে আসে এরা।
ফেরত আসারা হলো- নরসিংদী জেলার সুমি খাতুন (২৫), খুলনার জেলার আছমা খাতুন (২৫), নার্গিস খাতুন (২৪), ঝিনাইদহ জেলার নাজমা বেগম (২৩), নাটোর জেলার মুক্তি খাতুন (২৪), যশোর জেলার মাহফুজা খাতুন (২৩), শরিফা খাতুন (২৫), কুমিল্লা জেলার সেলিনা খাতুন (২৬), বরিশাল জেলার শায়লা পারভিন (২৪), ঢাকা জেলার মিতু বেগম (২৫), শিরিনা খাতুন (২৪) ও সাতক্ষীরা জেলার সুইটি খাতুন (২৪)।
ফেরত আসা খুলনার আছমা খাতুন বলেন, ভালো কাজের আশায় দালালদের মাধ্যেমে গত ৩ বছর আগে ভারতের হায়দ্রাবাদে যাই। সেখানে বাসা বাড়ির কাজ করার সময় সেদেশের পুলিশ তাকে আটক করে জেল খানায় পাঠায়। পরে জেল থেকে প্রজ্জলা নামে ভারতীয় একটি বেসরকারী এনজিও সংস্থা ছাড়িয়ে নিয়ে তাদের শেল্টার হোমে রাখে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মাদ রাজু বলেন, এরা দালালদের প্রলোভনে পড়ে বিভিন্ন সময় পাঁচার হয়ে ভারতে যায়। সেখানে গিয়ে তারা নানা ধরনের কাজ করার সময় সেদেশের পুলিশের কাছে আটক হয়। এরপর আদালতের মাধ্যেমে তারা ৬ মাস থেকে ৩ বছর মেয়াদে জেল খেটে বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে দেশে ফেরত আসে। ইমিগ্রেশনের আনুষ্টানিকতা শেষ করে তাদেরকে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন খান বলেন, ফেরত আসা বাংলাদেশী ১২ নাগরিকদের থানার আনুষ্টানিকতা শেষে তাদেরকে তাদের বাড়ি পৌছে দেওয়ার জন্য যশোর জাস্টিস এন্ড কেয়ার ও জাতীয় মহিলা আইনজীবি সমিতি নামে দুইটি বেসরকারী এনজিও সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জাতিয় মহিলা আইনজীবি সমিতির প্রোগ্রাম অফিসার রেখা বিশ্বাস বলেন, এরা বিভিন্ন সময়ে দালালদের খপ্পরে পড়ে ভালো কাজের আশায় ভারতে পাঁচার হয়। এরপর সেখানে যেয়ে ঝুকি পূর্ন কাজ করার সময় সেদেশের পুলিশের কাছে আটক হয়। এরপর দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে চিঠি চালাচালির এক পর্যায়ে বেনাপোল চেকপোষ্ট দিয়ে স্বদেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
জাষ্টিস এন্ড কেয়ার এর সমন্বয়কারী রোকেয়া পারভিন বলেন ফেরত আসাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তবে কেউ যদি আইনি সহয়তা চায় তাহলে তাদের আইনের সহায়তা দেওয়া হবে।