খবর৭১ঃ স্নাতক পাস করেও চাকরি মিলছে না দেশের ৬৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ৬৬ শতাংশ বেকার থাকছেন। মাত্র ২১ শতাংশ শিক্ষার্থী স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরি পান। ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী অন্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর বা কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করছেন এবং ৩ শতাংশ নিজ উদ্যোগে কিছু করছেন।
জরিপে আরও উঠে আসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস কারীদের মধ্যে অধিকাংশ ব্যবসায় প্রশাসনের শিক্ষার্থী। এছাড়া নিজস্ব উদ্যোগে কাজ করার ক্ষেত্রেও ব্যবসায় প্রশাসনের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত জরিপটি পরিচালনা করে বিআইডিএস। দৈবচয়নের ভিত্তিতে দেশের ৫৪টি সরকারি ও বেসরকারি কলেজের ২০১৭ সালে অনার্স (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর মুঠোফোনে জরিপটি চালানো হয়। জরিপে ১ হাজার ৬৩৯ জন শিক্ষার্থী, ২০২ জন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত ২৩৩ জন চাকরিজীবীর মতামত নেওয়া হয়। এ জরিপে মূলত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা শ্রমশক্তিতে কতটুকু অবদান রাখছেন, তা জানার জন্য করা হয়।
জরিপের বিষয়ে বিআইডিএসের গবেষক মিনহাজ মাহমুদ বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে শিক্ষার গুণগত মান ভালো নয়। তাই সময়ের প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ করে তুলতে হবে। এর সঙ্গে কলেজগুলোতে বিনিয়োগও বাড়াতে হবে।
স্নাতক পাস শেষে চাকরি নেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো সহযোগিতা পান না বলে জানান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা। মাত্র ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী জানান, তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি খোঁজার সুবিধা রয়েছে। ৮৪ শতাংশ স্নাতক পাস করা শিক্ষার্থী চাকরি খুঁজতে ইন্টারনেট বা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেন।
জরিপে অংশ নেওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানেরা জানান, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে কলেজগুলোতে যথেষ্ট ঘাটতি আছে। সেজন্য সরকারকে আরও বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ দেন তারা।
জরিপে উঠে আসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত কলেজের সংখ্যা সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ২ হাজার ১৫৪টি। কলেজগুলোতে এখন মোট শিক্ষার্থী আছেন ২০ লাখের মতো।
এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মসিউর রহমান বলেন, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে হারে বিনিয়োগ হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সেভাবে হয় না। আমরা পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আনছি। ভালো লেখকের বই আনার চেষ্টা করছি। করোনার মধ্যেও অনলাইনে ক্লাস চালু রেখেছি। তবে আমি বলব না জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান প্রত্যাশিত।