খবর৭১ঃ
ধর্ষণ নিয়ে চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করল সুইজারল্যান্ডের একটি আদালত। ধর্ষকের শাস্তি কমানোর যুক্তিতে আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, মাত্র ১১ মিনিট ধর্ষণ করা হয়েছে ও নির্যাতিতা গুরুতর আহতও হয়নি।
আদালতের ওই বিতর্কিত রায়ের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভে উত্তাল সুইজারল্যান্ড।
সে দেশের বাসেল শহরের মানুষ রাস্তায় নেমে আদালতের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রীতিমতো বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে। কী করে আদালত এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
ভুক্তভোগী ওই নারী দুই পুর্তগীজ নাগরিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করে। এর মধ্যে একজন ৩৩ বছর বয়সী। আরেকজনের বয়স ১৭ বছর।
তদন্তে ধর্ষণের প্রমাণও মেলে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ৩৩ বছর বয়সী ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তবে অপ্রাপ্ত বয়স্ক সঙ্গীকে কোনো সাজা দেওয়া হয়নি।
ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়, জোওয়াও পি. নামের ৩৩ বছর বয়সী পর্তুগীজ নাগরিককে ৫১মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। পরে তা থেকে কমিয়ে ৩৬ মাস কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
দোষী সাব্যস্ত করার পর অভিযুক্তকে এর আগে ৫১ মাসের শাস্তি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি আদালত সেই শাস্তি কমিয়ে ৩৬ মাস করে। শাস্তি কমাতে গিয়ে আদালত যে মন্তব্য করেছে, তা নিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে নেমে পড়েছে বাসেল শহরের মানুষ।
আদালতের সামনে বিক্ষোভকারীরা ব্যানার নিয়ে রীতিমতো বিক্ষোভ দেখায়। তাঁরা চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘১১ মিনিট, ১১ মিনিট অনেক বেশি’। আদালতের শাস্তি কমিয়ে দেওয়ার রায়কেও মানেন না বলে তাঁরা দাবি করছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা। আদালতের কাছে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয়েছে। নির্যাতিতার আইনজীবী জানিয়েছেন, তিনি আদালতের রায়ে হতবাক।
সুইজারল্যান্ডের সমাজকর্মী মার্সেল কলাম্ব এক টুইটবার্তায় বলেন, ৪ বছরের কারাদণ্ড এমনিতেই কম। তার মধ্যে আরও কমালে নারীরা আরও নিরাপত্তাহীন হবে। এরকম অপরাধ আরও সংগঠিত হতে থাকবে। এটা যৌন সহিংসতার জন্য ভুক্তভোগীদের আরও কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলবে।
মনোবিজ্ঞানীদের মতে, এ ধরনের রায়ে অপরাধীদের এরকম আরও কাজ করতে সাহায্য করবে। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, ১১ মিনিট তো শুধুমাত্র শারীরিকভাবে অত্যাচার। কিন্তু নির্যাতিতার অনেক বেশি সময় লাগে ওই ট্রমা থেকে বেরিয়ে আসতে।