খবর৭১ঃ ঢাকাই ছবির হালের দর্শকপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ দাবি করেছেন, সম্প্রতি তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নামে-বেনামে গুজব ও মিথ্যাচার ছড়ানো হচ্ছে।
সিয়াম তাকে নিয়ে কুৎসা, মিথ্যাচার ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। অন্যথায় তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও হুশিয়ারি দিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে রোববার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন সিয়াম।
পাঠকের উদ্দেশে সিয়ামের সেই স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো—
‘সম্মানিত ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীগণ
সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ব্যক্তি এবং কিছু তথাকথিত ভুঁইফোড় অনলাইন পোর্টাল আমার নাম উল্লেখ করে মূলত অনলাইন মাধ্যমে আমাকে নিয়ে কাল্পনিক গল্প থেকে শুরু করে নানাবিধ মিথ্যাচার ছড়িয়ে যাচ্ছেন। এটি বলা বাহুল্যমাত্র যে, সব গল্পগাঁথা, মিথ্যাচার ও নোংরামোর মূলত কোনো ভিত্তিই নেই।
একজন সামান্য মিডিয়াকর্মী হিসেবে আমি প্রতিটি সময় চেষ্টা করি আমার শুভানুধ্যায়ী থেকে শুরু করে সম্মানিত সব দর্শককে সুস্থ বিনোদন দেওয়ার জন্য এবং তাদের জন্য আমার চেষ্টার শেষ নেই। সুস্থ সংস্কৃতিচর্চা আমার এই বিরামহীন প্রচেষ্টা সবসময় চলমান।
আপনারা বোধকরি লক্ষ্য করে থাকবেন যে, বর্তমানে বাংলাদেশের মিডিয়া জগতে একটা অস্থিতিশীল কিংবা অস্থির যা-ই বলি না কেন, তেমন পরিবেশ বিরাজমান। সেগুলোর কারণ কিংবা বিধেয় নিয়ে তর্কবিতর্ক হতেই পারে। যে কোনো যৌক্তিক তর্কবিতর্ক নতুন ভাবনার বিকাশ ঘটায় এবং এগুলো সুস্থ সমাজের উপাদানও বটে।
কিন্তু এসব তর্কবিতর্ক আর মিথ্যাচার কিংবা কুৎসা রটাবার যে ‘ফাইন-লাইন’ রয়েছে, সেটি ছাপিয়ে যখন আমাকে হীন উদ্দেশ্যে নানাবিধ মিথ্যাচারে বিদ্ধ করা হয় এবং একই সঙ্গে আমার পারিবারিক জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়, তখন কেবল একজন অভিনেতা/মিডিয়াকর্মী হিসেবেই নয়, বরং একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেও আমার দায় জন্মে আমাকে যারা ভালোবাসেন, শ্রদ্ধা করেন এবং যারা আমার শুভাকাঙ্ক্ষী তাদের প্রতি আমার একটি বার্তা পৌঁছে দেওয়ার।
বলাবাহুল্য এই বার্তা আমাকে যারা ভালোবাসেন কিংবা শুভাকাঙ্ক্ষী তাদের জন্য স্বস্তির হলেও খুব সম্ভবত যারা এই কুৎসা রটাচ্ছেন তাদের জন্য স্বস্তির নয়। সাম্প্রতিক সময়ে আমার ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীরা কিছু বিষয়ে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। আগেই উল্লেখ করেছি, কিছু ব্যক্তি এবং কিছু তথাকথিত ভুঁইফোড় অনলাইন পোর্টাল আমার নাম উল্লেখ করে মূলত অনলাইন মাধ্যমে আমাকে নিয়ে কাল্পনিক গল্প থেকে শুরু করে নানাবিধ মিথ্যাচার ছড়িয়ে যাচ্ছেন। আমি এসব ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ করছি।
স্পষ্টতই এসব বক্তব্য এবং সেগুলো ছড়িয়ে দেওয়া মানহানিকর এবং একই সঙ্গে বাংলাদেশে বিদ্যমান সাইবার অপরাধের যে নানাবিধ ধারা-উপধারা রয়েছে, তার অন্তর্ভুক্ত। এসব মিথ্যে মানহানিকর বক্তব্য রটনা আমার ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক সবক্ষেত্রেই ক্ষতির মুখোমুখি করেছে এবং আমি এই পুরো ব্যাপারটিতে মর্মাহত ও বিস্মিত।
আমি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের একজন আইন মান্যকারী নাগরিক। পেশায় একজন অভিনেতা ও আইনজীবী। আমি স্পষ্ট জানাতে চাই, যারা এসব মানহানিকর কর্মকাণ্ড তথা এই কুৎসা রটনায় এখন পর্যন্ত জড়িত আমি প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ দ্রষ্টব্য) আমি মনে করি একজন আইন মান্যকারী নাগরিক হিসেবে আদালতের ওপর বিচারের ভার ছেড়ে দেওয়াটাই সঠিক সিদ্ধান্ত।
আমি এই লেখাটির মাধ্যমে সেসব ব্যক্তির কাছে আহ্বান করব— আপনারা যারা এসব কুৎসা, মিথ্যাচার, নোংরামো সামান্য হলেও একোমোডেট করেছেন কিংবা সেটির অংশ হয়েছেন (বুঝে কিংবা না বুঝে) দয়া করে আপনারা তা থেকে বিরত থাকুন। একজন ব্যক্তির জীবন মিথ্যেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার সামান্য অধিকার আসলে কেউ রাখতে পারেন আমি তা কোনোভাবেই মনে করি না। একই সঙ্গে আমি এও মনে করি না কারও বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা বা ছড়াবার কাজগুলো গৌরবের কোনো সূত্রও হতে পারে।
আমি আমার সব দর্শক, শুভানুধ্যায়ীকে অনুরোধ করব— আপনারা এসব সাইবার বুলিইংয়ের বিরুদ্ধে সুতীব্র অবস্থান নিন এবং সাইবার বুলিদের ‘না’ বলুন।’