সৈয়দপুরে কোভিড-১৯ এর গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু

0
280

মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপু :
আজ গতকাল শনিবার(৭ আগস্ট) সারাদেশের মতো নীলফামারীর সৈয়দপুরেও গণ টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সকাল থেকে টিকা নিতে আসা লোকজনের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রেই নির্দিষ্ট পরিমাণে টিকা প্রদান করায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা অনেকেই টিকা নিতে না পেরে ব্যর্থ হয়ে ফিরে গেছেন। সৈয়দপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, আজ শনিবার উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ৫টি কেন্দ্রে এবং পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডের ১৫টি টিকাদান কেন্দ্রে করোনা ভাইরাসের টিকা প্রদান করা হয়েছে। সৈয়দপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের কেন্দ্রগুলো ছিল কামারপুকুর ইউনিয়নে কামারপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নে হাজারীহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাঙ্গালাপুর ইউনিয়নে চৌহমুনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বোতলাগাড়ী ইউনিয়নে পোড়ারহাট সিদ্দিকীয়া আলিম মাদরাসা ও খাতামধূপুর ইউনিয়নে মধুপুর ইউনাইটেড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আর পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে একটি করে টিকাদান কেন্দ্র ছিল। গণটিকা প্রদান কার্যক্রমের শুরুতে ইউনিয়ন পর্যায়ে ৬ শ’ জন করে এবং পৌরসভার প্রতিটি কেন্দ্রে ২শ’ করে ২০টি কেন্দ্রে মোট ৬ হাজার নারী পুরুষকে টিকা দেয়া হয়।
আজ সরেজমিনে বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় টিকা কেন্দ্রে দেখা যায়, টিকা নিতে আসা বিভিন্ন বয়সের নারী

পুরুষের দীর্ঘ লাইন দাড়িয়ে টিকা নিতে অপেক্ষা করছেন। এ সময় সেখানে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে টিকাকার্ডে লিখে টিকা প্রদান করা হচ্ছিল। আর কার্যক্রম তদারকি করছিলেন বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শ্রী প্রণোবেশ চন্দ্র বাগচীর নেতৃত্বে ওয়ার্ড সদস্যরা। এ সময় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান প্রণোবেশ চন্দ্র বাগচীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, সকালে টিকাদানের শুরুতেই কিছুটা বিশৃংখলা দেখা দিলে পরবর্তীতে মানুষজন লাইনের দাঁড়িয়ে সুষ্ঠুভাবে টিকা গ্রহন করেন। তবে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে টিকা কার্ড লিখে টিকা প্রদান করতে কিছুটা সময় নস্ট হয়েছে। অন্যান্য ইউনিয়নেও একই চিত্র দেখা গেছে। এর আগে বেলা ১১টায় সৈয়দপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের টিকা দান কেন্দ্র শহরের বিমানবন্দর সড়কের জেলা পরিষদ ডাকবাংলোতে গিয়ে দেখা যায় মানুষজন সুষ্ঠুভাবে টিকা গ্রহন করছেন। কিন্তু ওই কেন্দ্রে মাত্র ২ শ’ জনকে টিকা দেয়ায় অনেকেই টিকা নিতে না পেয়ে ফিরে যান। এ সময় কথা হলে হাতিখানা এলাকার মো. রফিকুল ইসলাম (৪৭) জানান, গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে শুনে টিকা নিতে এসেছি। কিন্তু কেন্দ্রের সংশ্লিষ্টরা তাঁক জানান আজ আর টিকা প্রদান করা হবে না। বরাদ্দকৃত টিকা শেষ হয়ে গেছে । ফলে টিকা না নিয়েই ফিরে যান তিনি। এ কেন্দ্রে টিকা নিতে আসা দারুল উলুম মাদরাসা এলাকার বাসিন্দা আবু বক্কর জানান, অনলাইনে টিকার জন্য রেজিষ্ট্রেশন করেছি। টিকা গ্রহণের ম্যাসেজ না পেলেও গণটিকা দেয়া শুরু হয়েছে শুনে টিকা নিতে এসেছি। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা জানান, বরাদ্দকৃত টিকা শেষ হয়ে গেছে। ফলে তিনি টিকা নিতে না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান। ওই কেন্দ্রে আসা রফিকুল ইসলাম, আবু বক্করের মতো অনেকেই টিকা কেন্দ্রে এসে টিকা গ্রহণে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যেতে দেখা যায়। সৈয়দপুর পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডের ১৫টি টিকা দান কেন্দ্রেও টিকা নিতে আসা মানুষজন টিকা নিতে না পেরে ফিরে যেতে বাধ্য হন। এদিকে, গতকাল শনিবার সকাল থেকে বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শন করেন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রাবেয়া আলিম সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন, পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. রমিজ আলম,নবাগত উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু মো. আলেমুল বাসার, সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল হাসনাত খান প্রমুখ। আর সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলররা উপস্থিত থেকে গণটিকা দান কার্যক্রম তদারকি করেন। গণটিকা প্রদান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে গ্রাম পুলিশ, আনসার ভিডিপির ও পুলিশ সদস্যরা দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।

সৈয়দপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু মো. আলেমুল বাসার বলেন, গণটিকা কার্যক্রম প্রথম দিনে উপজেলায় ৬ হাজার মানুষকে করোনা ভাইরাসের টিকা প্রদান করা হয়েছে। তিনি জানান, উপজেলার সর্বত্র মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাসের টিকা নিতে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। উপজেলার ২০ টি টিকাদান কেন্দ্রে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে টিকাদান কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here