খবর৭১ঃ দেশে উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে করোনা মহামারি সংক্রমণ। বেড়েই চলেছে মৃত্যুহার। সবাই যখন করোনা প্রতিরোধে ব্যস্ত এই ফাঁকে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সারা দেশে ৫৩৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এই করোনা মহামারির মধ্যে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বর্তমান হারে বাড়লে অবস্থার অবনতি হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ডা. নাজমুল ইসলাম।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এ মুখপাত্র।
ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসের প্রতি বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ডেঙ্গুকে উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই। বৃষ্টিতে পানি জমে থাকছে। এ কারণে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা কিছুটা বাড়ছে। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্যমতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৮০ জন। চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ২১৫ জন।
গত ১ জুন থেকে ১২ জুন পর্যন্ত ঢাকা শহরের ১ হাজার ১২টি বাড়িতে জরিপ চালানো হয়। এর মধ্যে ২০৭টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছিল।
চিকিৎসকদের মতে, ঢাকায় ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। করোনার মহামারির এই সময়ে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা কেউ বুঝতে পারছে না। নীরবেই বাড়ছে। ডেঙ্গু পরিস্থিতির দিকে এখনই নজর দেওয়া না হলে পরিস্থিতির অবনতি হবে।
এ ছাড়া করোনার মধ্যে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের কথা স্বীকার করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অধিদপ্তর বলছে, জুন নাগাদ ডেঙ্গু রোগী অনেক বেড়েছে।
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরিপের তথ্যমতে, নির্মাণাধীন ভবনের জমে থাকা পানি, প্লাস্টিকের ড্রাম, বালতি, পানির ট্যাংক, বাড়ি করার জন্য নির্মিত গর্ত, টব, বোতল ও লিফটের গর্তে এডিসের লার্ভা বেশি পাওয়া গেছে। ডা. রোবেদ বলেন, এসব জায়গাগুলোতেও নজরদারি বাড়াতে হবে। জরিপে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের মধ্যে মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোড, লালমাটিয়া, সায়দাবাদ এবং উত্তর যাত্রাবাড়ী এলাকায় এডিসের লার্ভা বেশি পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রিভিলেজ টিম বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি পেয়ে মোট ৮ লাখ ২৭ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বর্তমান হারে বাড়লে অবস্থার অবনতি হবে বলে আশঙ্কা করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এ মুখপাত্র।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে আরও বলা হয়, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেশে কবে আসবে সে ব্যাপারে অধিদপ্তর নিশ্চিত নয়। তবে যখনই আসুক, যারা আগে এই টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন, কিন্তু দ্বিতীয় ডোজ নেননি, তাদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই টিকা দেওয়া হবে।