খবর৭১ঃ ঢাকার কাছে সাভারে একটি খামারে রয়েছে ২০ ইঞ্চি উচ্চতা এবং ২৬ কেজি ওজনের একটি সাদা রঙের ছোট্ট গাভী। নাম তার রানী, বয়স দুই বছর। গরু প্রজাতির জন্য দুই দাঁত উঠলেই প্রাপ্তবয়স্ক বিবেচনা করা হয়।
সেই হিসেবে রানীর দুটি দাঁত থাকলেও তাকে দেখলে বাছুর বলে মনে হতে পারে। বাছুর যেমন জন্মের পর হাঁটতে গিয়ে এদিক ওদিক দুলতে থাকে, রানীর হাঁটাও কিছুটা ওরকমই।
গলায় বাধা ঘণ্টায় টুংটুং করে শব্দ করে সে যখন হাঁটে তখন পায়ের দিকে একটু মনোযোগ দিয়ে তাকালে অবশ্য মনে হবে হয়ত কোন জন্মগত ত্রুটি রয়েছে গাভীটির।
কিন্তু আসলে এটি ভুট্টি নামের একটি বিশেষ জাতের গাভী। এই প্রজাতি এমনিতেই খর্বাকৃতি হয়ে থাকে। কিন্তু সেই তুলনায়ও রানী অনেক বেশি খর্বাকৃতি।
সাভারের শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড উত্তরবঙ্গের নওগাঁর এক কৃষকের কাছ থেকে এগারো মাস আগে গাভীটি সংগ্রহ করেছে বলে জানিয়েছে।
তাদের দাবি অনুযায়ী রানীর জন্ম বাংলাদেশে।
কোম্পানিটির ম্যানেজার এমএ হাসান হাওলাদার বলছিলেন, ‘দেশি জাতের দুই দাঁতের গরুর ওজন সাধারণত ১৩০ থেকে ১৫০ কেজি হয়ে থাকে। ভুট্টি প্রজাতির প্রাপ্তবয়স্ক গরুর ওজন ৫০ থেকে ৮০ কেজি। কিন্তু রানীর ওজন একটু বেশি কম।’
তিনি বলছিলেন, আকারে ছোট হওয়ার কারণে রানী খামারের অন্য গরুদের ভয় পায়।
‘তাই তাকে আলাদা রাখা হয়। সে খুব একটা খায় না। দিনে দুইবার সামান্য পরিমাণে ভুষি ও খড় খায়। বাইরে ঘুরতে পছন্দ করে এবং কোলে নিলে খুশি হয় বলে মনে হয়।’
মি. হাওলাদার বলছেন, ভুট্টি জাতের গরু ভুটানের একটি প্রজাতি। যা বাংলাদেশের অনেক খামারিরা আমদানি করে থাকেন।
মি হাওলাদার বলছেন, ‘ভারতে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরু হিসেবে রেকর্ডধারী গরুটির আকৃতি এবং ওজন রানীর চাইতে বেশি তাই তারা দুদিন আগে বিশ্ব রেকর্ডের জন্য গিনেজ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন।’
তিনি জানিয়েছেন গিনেজ কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে ইমেইলে যোগাযোগ করেছে এবং তিন মাসের মধ্যে সরাসরি উপস্থিত হয়ে যাচাই করে দেখবে রানী আসলেই বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরুর খেতাব পাওয়ার দাবিদার কিনা।
গিনেজ কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে গেলে এখন বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরুর রেকর্ডধারী ‘মানিকিয়াম’ ও তার মালিকের ছবি দেখা যায়।
২০১৪ সাল থেকে সে এই খেতাবের অধিকারী। মানিকিয়ামের উচ্চতা ২৪ ইঞ্চির একটু বেশি।
রেকর্ডের খেতাব পাবে কিনা সেটি এখনো নিশ্চিত না হলেও রানী ইতিমধ্যেই খামারের আশপাশের লোকজন এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মনোযোগ কাড়তে শুরু করেছে।
সাভার উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার ডা. সাজেদুল ইসলাম বলছেন, ‘আমরা নিজেরা গরুটির মাপ ও ওজন নিয়েছি। এটা নিঃসন্দেহে খুবই ছোট গরু। বিশ্ব রেকর্ড হবে কিনা সেটাতো যাচাই করতে সময় লাগবে। কিন্তু বিশ্ব রেকর্ড পেলে বিষয়টা খুব আনন্দের হবে।’
কুরবানির মৌসুম সামনে। এসময় সাধারণত বড় আকৃতির গরু ও তার দাম নিয়ে হাট এবং সংবাদমাধ্যমে বেশ মাতামাতি হয়।
রানীর জন্য বিষয়টি উল্টো। খর্বাকৃতির হওয়ার জন্যই আলোচনায় রয়েছে সে।
যদিও খামারের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তারা রানীকে কুরবানির গরু হিসেবে বিক্রি করতে আগ্রহী নন। সূত্র: বিবিসি বাংলা।