খবর৭১ঃ নিরাপদ জীবনের জন্য করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আজ থেকে শুরু হওয়া কঠোর বিধিনিষেধে সাময়িক অসুবিধা মেনে নিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, করোনার সংক্রমণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পৌঁছে যাওয়ায় জনগণের সুরক্ষায় শেখ হাসিনা সরকার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন সেতুমন্ত্রী।
বিধিনিষেধে অসহায়, কর্মহীন মানুষের জন্য সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান কাদের।
দেশে নানা দুর্যোগে এবং সংকটে প্রধানমন্ত্রী দক্ষতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাঁর সিদ্ধান্ত জনগণের কল্যাণে নিবেদিত। গত কয়েকদিনে করোনায় ধারাবাহিকভাবে শতাধিক মৃত্যু এবং উচ্চমাত্রায় সংক্রমণ ভয়ানক অবস্থার ইঙ্গিত দিচ্ছে, এমন অবস্থায় সচেতনতা ও সতর্কতার সর্বোচ্চ ডিগ্রি অনুসরণ করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
জীবিকার আগে জীবনের সুরক্ষা, অতীতে আমরা জাতি হিসেবে কখনো কখনো কঠিন সময় অতিক্রম করেছি এমন মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার মানবিক ও দক্ষ নেতৃত্বে এ কঠিন পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হবো ইনশাআল্লাহ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশা প্রকাশ করে বলেন, এ আঁধার কেটে যাবে, সুদিন আসবে তবে তার আগে ঘরে ঘরে সতর্কতার দুর্গ গড়ে তুলতে হবে।
‘যেকোনো সংকট উত্তরণে প্রয়োজন ধৈর্যসহকারে ঐক্যবদ্ধ থাকা। সবাইকে ঐক্যের মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে স্বাস্থ্য সচেতনতার মধ্য দিয়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করতে হবে।’ বলেন কাদের।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, জীবনের সুরক্ষার অনিবার্য প্রয়োজনেই এই লকডাউন। লকডাউনে অনেক অসহায় ও খেটে খাওয়া মানুষ সংকটে পড়েছে, কিন্তু সরকার এই বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, কোনো অসহায় মানুষ যাতে কষ্ট না পায়, না খেয়ে থাকে, এজন্য শেখ হাসিনা সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছেন। ত্রাণ সামগ্রী দিতে গিয়ে যাতে নিম্ন আয় ও ভাসমান মানুষ কোনোভাবেই বাদ না পড়ে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও দলের নেতাকর্মীদের যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়ার আহবান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘প্রয়োজনে ঘরে ঘরে গিয়ে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে হবে এবং শতভাগ মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করতে হবে।
করোনা কাউকে ছাড় দেয় না, কোনো শ্রেণিভেদ মানে না। তাই দলমত নির্বিশেষে সবাইকে করোনা মোকাবেলা করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানান সড়ক পরিবহনমন্ত্রী।
২০১৬ সালের আজকের দিনে গুলশান হলি আর্টিজান বেকারিতে মহান মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিরুদ্ধে উগ্রবাদীদের তৈরি একটি দুষ্ট ক্ষত উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইতিমধ্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষদাঁত ভেঙে দেওয়া হলেও এ অপশক্তি একেবারে নির্মূল হয়েছে তা বলা যাবে না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় বিষফোঁড়া হয়ে আছে সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদ। এই শক্তি অতিগোপনে তলে তলে তাদের শক্তিবলয় বাড়াচ্ছে, তাদের নীরবতা অন্য কোনো ভয়াবহ ইঙ্গিতও হতে পারে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে।
ওবায়দুল কাদের দাবি করেন, উগ্রবাদের বিরুদ্ধে দেশের জনগণের মাঝে একটি ঐক্য তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে সামাজিক প্রতিরোধ তারই প্রমাণ।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতার মূলোৎপাটনের মাধ্যমে একটি বিজ্ঞানমনস্ক আধুনিক রাষ্ট্র তথা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।