খবর ৭১: পৃথিবী থেকে চাঁদের সর্বোচ্চ দূরত্ব ৪ লাখ ১০ হাজার কিলোমিটারের মতো। তবে ডিম্বাকার ঘূর্ণনপথের কারণে মাঝেমধ্যে পৃথিবীর অনেকটা কাছে চলে আসে চাঁদ।
পৃথিবীর সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে থাকা চাঁদের দূরত্ব যখন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে প্রায় ১২ শতাংশ কমে আসে, তখন চন্দ্রপ্রভা হয় আরও উজ্জ্বল। দূরত্বের হিসাবে চাঁদের অবস্থান পৃথিবী থেকে তখন ৩ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটারের আশপাশে। আর এই উজ্জ্বল, বড় আকারে দৃশ্যমান চাঁদেরই নাম সুপার মুন।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের দিকে এই মহাজাগতিক দৃশ্যের প্রত্যক্ষদর্শী হবে বাংলাদেশের মানুষও। এ বছরে এটাই শেষ সুপার মুন। এই সুপার মুন একটি বিশেষ কারণে আলাদা। কারণ, আজ রাতের আকাশে উদিত হচ্ছে যে চাঁদ, তার নাম ‘স্ট্রবেরি মুন’।
এই নামটি এসেছে উত্তর আমেরিকার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে। জুনের এই পূর্ণিমার পর গ্রীষ্ম শুরু হয় উত্তর গোলার্ধে। ছোট হতে থাকে দিন, বাড়তে থাকে রাতের দৈর্ঘ্য। আগের কালে ডাকোটা, লাকোটাসহ কয়েকটি আদিবাসী জনগোষ্ঠী এই পূর্ণিমার পর থেকেই স্ট্রবেরি সংগ্রহ শুরু করত। আর সে কারণেই এই পূর্ণিমার চাঁদের নাম ‘স্ট্রবেরি মুন’।
স্ট্রবেরির সঙ্গে মিলিয়ে আজ রাতের চাঁদের রং গোলাপি দেখতে চাইলে অবশ্য হতাশ হতে হবে। কারণ, আকাশে চাঁদের অবস্থান অনেকটা কাছে মনে হবে ঠিকই, তবে এর প্রভায় গোলাপি ছাঁট থাকার সম্ভাবনা একদম কম।
চাঁদের লালচে রূপ কখনও কখনও অবশ্য দেখা যায়, তবে তার কারণ একেবারেই আলাদা। চন্দ্রগ্রহণের সময় পৃথিবীর ছায়ায় চাঁদ যখন পুরোপুরি ঢেকে যায়, তখন সূর্যের আলোর লাল তরঙ্গ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে পৌঁছে যায় চাঁদে। এ কারণে পূর্ণ গ্রহণের সময়েও অনেক সময় চাঁদে দেখা যায় লাল আভা।
তবে আজ রাতে চাঁদে লাগছে না কোনো গ্রহণ, বরং পৃথিবীর কাছাকাছি এসে বাড়বে উজ্জ্বলতা। এই ঔজ্জ্বল্য সূর্যের কাছ থেকে ধার করা আলোয় হলেও, সেই আলো সরাসরি সূর্য থেকে পড়বে চাঁদের বুকে।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাধা না থাকায় চাঁদ থেকে প্রতিফলিত সূর্যের এই আলো নরম হয়েই ধরা দেবে মানুষের চোখে।