খবর ৭১: রাজধানীতে ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রশাসন ও দুই সিটি করপোরেশনকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (২২ জুন) সকালে সরকারি বাসভবন থেকে ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ-ডিটিসিএ’র বোর্ড সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।
ইনার রিং রোডের ইস্টার্ন বাইপাস এবং ওয়েস্টার্ন অংশের হালনাগাদকরণে ডিটিসিএ’র মাধ্যমে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রকল্প প্রস্তাব চূড়ান্ত করার কথা জানান ওবায়দুল কাদের। বলেন, ডিটিসিএ প্রদত্ত বহুতল ভবনের জন্য ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স ছাড়পত্র গ্রহণের বিষয়টি আইনগত বিধি-বিধানের আওতায় রাজউকের সঙ্গে আলোচনা করে নিষ্পত্তি করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, সমন্বহীনভাবে ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় সড়ক খনন করা যাবে না।
ওবায়দুল কাদের জানতে চান সারা বিশ্বকে উন্নয়ন অর্জনে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু ঢাকা শহর কেন পিছিয়ে থাকবে? মন্ত্রী এ বিষয়ে ডিটিসিএকে ঢাকার দুই মেয়রকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
ডিটিসিএ’র বোর্ড সভায় এসময় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র সেলিনা হায়াত আইভি, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, ডিটিসিএ’র নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ডিএমপি কমিশনার।
ঢাকা শহরের যানজট কমিয়ে গাড়ির গতিবেগ বাড়াতে ইনার রিং রোড প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে বহুমুখী যোগাযোগ সৃষ্টি হবে এবং শহরে গাড়ির চাপ কমবে। ৯১ কিলোমিটারের এ বৃত্তাকার সড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয় চিন্তা করা হচ্ছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা।
পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
এসময় তিনি এদেশের রাজনীতিতে হিংস্রতা আর ষড়যন্ত্রের হোতা বিএনপি বলে মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা সরকার কর্তৃত্ববাদী নয়, কারও ওপর হিংস্র আচরণও করেনি বরং প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলের নানা উস্কানির মুখে অত্যন্ত সহনশীলতা ও ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন।
সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপিই দানবীয় আচরণ করছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শত উস্কানির বিপরীতে শেখ হাসিনা সরকার অত্যন্ত সহনশীলতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে।
আওয়ামী লীগ নাকি হিংস্র-বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, যাদের হাতে ২১ হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী হত্যার শিকার হয়েছেন। তারা আজ আওয়ামী লীগকে হিংস্রতার কথা বলে!
বিএনপি দেশে স্থিতিশীলতা চায় না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা চায় দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের নামে জনগণ ও রাষ্ট্রের সম্পদ নষ্ট করাই বিএনপির রাজনীতি।
জনগণের প্রতি রাজনৈতিক দল হিসেবে যে দায়িত্বশীলতা রয়েছে তা পালনে বিএনপি অনেক আগেই ব্যর্থ হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, শেখ হাসিনার উদারতা দেখে ভাববেন না এটা আমাদের দুর্বলতা।
নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে পারবে না বুঝতে পেরে বিএনপি যে নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে, তা কারো অজানা নয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক স্পষ্টভাবে বলেন নির্বাচন ছাড়া সরকার গঠনের আর কোনো বিকল্প পথ নেই, এটাই সংবিধান সম্মত পথ। জনগণ চাইলেই নির্বাচিত হবেন এবং সরকার গঠন করবে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে বলেই জনগণের প্রতি আস্থাশীল।
ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে মিথ্যাচার আর ষড়যন্ত্রের পথ ত্যাগ করে জনগণের জন্য রাজনীতি করার কথা বলেন।