খবর ৭১: রাজধানীর কদমতলীর একটি বাসা থেকে একই পরিবারের তিনজনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন আটক মেহজাবিন ইসলামের খালা ইয়াসমিন।
শনিবার (১৯ জুন) গণমাধ্যমকে ইয়াসমিন জানান, আমার ভাগ্নি মেহজাবিনের স্বামী শফিক একজন খুনি ও একাধিক মামলার আসামি। ৫ বছর আগে কেরানীগঞ্জে একজনকে হত্যা করেন। সে মামলা থেকে রেহাই পেতে টাকার জন্য ভাগ্নি মেহজাবিনের সঙ্গে তার স্বামী শফিকুল ইসলামের প্রায় ঝগড়া হতো। তাছাড়া শফিক তার শালি আমার আরেক ভাগ্নি জান্নাতুল ইসলামের সঙ্গে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজ করত। এ ঘটনা আমার নিহত বোন মৌসুমী জানতে পেরে জামাতা শফিককে বাধা দিতেন। এ নিয়ে আমার বোনের সঙ্গে শফিকের প্রায় ঝগড়া হতো।
তিনি বলেন, শফিকের সঙ্গে আমার বোন পেরে উঠতে না পেরে তার ছোট মেয়ে জান্নাতুল ইসলামকে (শফিকের শালিকে) কারাগারে দিয়ে দেন। শফিক তদবির করে ৫ মাস পর তাকে কারাগার থেকে বের করে নিয়ে এসে আবার তার সঙ্গে অনৈতিক কাজ করেন। এ নিয়ে আমার ভাগ্নি ও বোনের সঙ্গে শফিকের কলহ লেগেই থাকত।
মেহজাবিন ইসলামের খালা ইয়াসমিন আরও বলেন, ৪ বছর আগে সফিক আমার বোনকে (তার শাশুড়ি) হত্যার উদ্দেশ্যে গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। চিকিৎসা করতেও বাধা দেয়। দরজা-জানালা বন্ধ করে আমার বোন ও ভাগ্নিকে প্রায়ই মারধর করত। এ বিষয়ে কদমতলী থানায় অভিযোগ জানিয়ে কোনো ফল না পেয়ে কোর্টে মামলাও করা হয়েছে।
ঘাতকের চাচাতো বোন পরিচয় দেওয়া শিলা গণমাধ্যমকে বলেন, গত দুদিন আগে স্বামী-সন্তানকে নিয়ে মায়ের বাড়িতে বেড়াতে আসে মেহজাবিন। এসেই তার ছোট বোন জান্নাতুলের সঙ্গে তার স্বামীর পরকীয়া রয়েছে বলে বাবা-মাকে অভিযোগ করে। এ নিয়ে অনেক কথা কাটাকাটি হয়। তার জেরেই হয়তো এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
এদিকে এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেহজাবিনের স্বামী শফিকুল ইসলাম বলেন, তাদের বাসা কদমতলীর বাগানবাড়িতে। মুরাদপুরে একটি বাসার দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকে তার শ্বশুর-শাশুড়ির পরিবার। স্ত্রী মেহজাবিনের সঙ্গে আমার বেশ কিছুদিন ধরেই বিরোধ চলছে। তারই জের ধরে সে ঘটনাটি ঘটিয়ে থাকতে পারে। এর আগেও তরমুজের সঙ্গে কিছু একটা মিশিয়ে সে হত্যার চেষ্টা করেছিল বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, শনিবার (১৯ জুন) রাজধানীর কদমতলীর একটি বাসা থেকে একই পরিবারের তিনজনের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন- মেহজাবিনের মা মৌসুমী ইসলাম (৪০), বাবা মাসুদ রানা (৫০) ও বোন জান্নাতুল (২০)। এছাড়া হত্যার চেষ্টা করা হয় আরও দুজনকে।
ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মা-বাবা ও বোনকে হত্যার পর স্বামী ও কন্যাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন মেহজাবিন ইসলাম মুন। মেহজাবিনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাকে সব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।