খবর৭১ঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত বার্ষিক বাজেটে গত এক দশকের অর্থ বরাদ্দ বিগত বছরগুলোর তুলনায় বেশি হলেও সে ধারাবাহিকতা রক্ষা হচ্ছে না ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে। এ অর্থবছরে চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৩৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকার কম বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের গত বছরের ব্যয় সংকুচিত হওয়ায় এ বছর বরাদ্দ কম রাখা হচ্ছে।
গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স কমিটি এ প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনা করেন। আগামী বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বাজেট অধিবেশনে প্রথমবারের মতো এ বাজেট উপস্থাপন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সিনেট চেয়ারম্যান হিসেবে সভায় সভাপতিত্ব করবেন।
ঢাবিতে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা শুরু
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বইয়ে দেখা যায়, ২০১১-১২ অর্থবছরে ২৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। পরবর্তী বছরগুলোতে বরাদ্দ বাড়তে থাকে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩৯৬ কোটি টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৬৬৪ কোটি টাকা, সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে ৮৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। গত বছর বাজেটের সব রেকর্ড ভাঙলেও এ বছর গত বছরের রেকর্ড ভাঙতে পারছে না। এছাড়াও গত বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের মধ্যে ৯৫ কোটি খরচ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স কমিটির একজন সদস্য বলেন, অন্যান্য বছর বিশ্ববিদ্যালয় যে বাজেট দেয় তা পূর্ণভাবে ব্যয় করতে পারে। কিন্তু চলতি বছর করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বেতন ভাতার অংশটা সহ সেবা খাত থেকে কিছু বরাদ্দ ব্যয় হয়েছে। বাকি কিছু অংশ তারা ব্যয় করতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সে হিসেব দেখেই বিশ্ববিদ্যালয়কে বরাদ্দ দিয়েছে। যার কারণে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট কমেছে।
ওই সদস্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ বিশ^বিদ্যালয় খুলবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। যার কারণে বিশ^বিদ্যালয়ের কিছু ব্যয়কে গত বছরের তুলনায় সংকুচিত করে দেখানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর ৮৩১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হবে। বাজেটে ২৬৪ কোটি টাকা শিক্ষক-কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন, ২২৪ কোটি টাকা ভাতা, পণ্য ও সেবায় খাতে ১৬৮ কোটি টাকা, পেনশন বাবদ ১২২ কোটি টাকা, গবেষণামঞ্জুরি ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (বিমক) অনুদান ৬৯৬ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৮৩ শতাংশ।
গবেষণায় বরাদ্দ বেড়েছে
অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। গত বছর ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও এবার ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও গবেষণাগারের সরঞ্জামাদির জন্য ৬ কোটি ৫ লাখ টাকা, শিক্ষা ও শিক্ষা উপকরণ ক্রয়ে ৫ কোটি টাকা, বিভাগীয় যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য ২ কোটি টাকা, রাসায়নিক দ্রব্যাদি ক্রয়ের জন্য আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তাছাড়া শিক্ষকদের গবেষণা ভাতা ১০ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
ঘাটতি বাড়বে এবার
বিশ্ববিদ্যালয়ের এবারের অর্থবছরে গত বছরের তুলনায় ঘাটতি ব্যয় বেশী ধরা হয়েছে। গতবছর ৪১ কোটি টাকা ঘাটতি থাকলেও এ বছর ৭০ কোটি টাকা ঘাটতি ধরা হয়েছে।
বাজেটের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আগামী ২৪ তারিখ সিনেট অধিবেশন রয়েছে। সে অধিবেশনে বাজেট পাশ করা হবে।