পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি: আদালতের নির্দেশে একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, একজন চিকিৎসক ও থানা পুলিশের উপস্থিতে ৫ মাস পর খুলনার পাইকগাছায় কবর থেকে এক গৃহবধুর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। সোমবার সকালে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ শাহরিয়ার হক এর উপস্থিতে উপজেলার কালুয়া গ্রামের মোঃ রফিকুল সরদারের মেয়ে ও একই এলাকার মোঃ মশিয়ার সরদারের স্ত্রী রোকাইয়া সিদ্দিকী রাণী’মা এর লাশ উত্তোলন করা হয়। লাশের প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। লাশ উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন, মেডিকেল অফিসার ডাঃ তাজুল ইসলাম, ওসি (অপারেশন) স্বপন রায়, এসআই তাপস দত্ত, এসআই তাকবীর হোসেন, এসআই বন্দনাসহ থানা পুলিশের একাধিক সদস্য। উল্লেখ্য মশিয়ারের পরিবার সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারী রাত আনুমানিক ২ টার দিকে মশিয়ার তার স্ত্রী রানীমাকে নিয়ে প্রকৃতির ডাকে বাহিরে আসে। এ সময় মশিয়ার বাথরুমে যায় ও রানীমা ওজু করতে পুকুরে নামে। কিছুক্ষণ পরে রফিকুল বাথরুম থেকে বাহিরে এসে দেখে তার স্ত্রী পুকুরের পানিতে ভাসছে। সে সময় কোন অভিযোগ না থাকায় রানিমাকে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়। এদিকে মেয়ের পিতা রফিকুল ইসলাম জানান, প্রথমে তাকে ভুল বুঝানো হয়েছিল। এরপর বিভিন্ন মাধ্যমে মেয়ের পিতা জানতে পারেন, তার কণ্যাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে এলাকায় প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন কর্মসূচিও পালিত হয়। এরপর রফিকুল সরদার বাদী হয়ে মোঃ মশিয়ার সরদার, মশিয়ারের পিতা, মাতাসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে পাইকগাছা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পাইকগাছা থানাকে এফআইআর এর নির্দেশ দিলে থানার ওসি মোঃ এজাজ শফি ৫ মে মামলাটি নথিভুক্ত করেন। মামলা দায়ের পরে পুলিশ মশিয়ার সরদারকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করে। এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাপস কুমার দত্ত, লাশ উত্তোলনের জন্য আবেদন করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক একজন ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন ডাক্তারের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দেন। সেই অনুয়ায়ী লাশ উত্তোলন করা হয়। ওসি মোঃ এজাজ শফি জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশে সোমবার সকালে লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে এবং মামলার এজাহার নামীয় আসামী মশিয়ার সরদারকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। বর্তমান মশিয়ার জেল হাজতে রয়েছে।