খবর৭১ঃ রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আরেকটু উন্নতির দিকে। তার ফুসফুস থেকে পানি সরানোর জন্য সর্বশেষ পাইপটিও খুলে ফেলা হয়েছে। ফিজিওথেরাপির অংশ হিসেবে অন্যের সাহায্য নিয়ে এখন প্রতিদিনই রুটিন করে একটু একটু করে তাকে হাঁটাচলা করানো হয়। তবে করোনা পরবর্তী জটিলতায় কিডনির সমস্যা এখনো শঙ্কামুক্ত হয়নি। হার্টবিট বাড়ার কারণে তাকে আরও কিছুদিন সিসিইউতে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার চিকিৎসকরা।
বুধবার খালেদা জিয়ার মেডিকেল টিমের একজন চিকিৎসক এসব জানান। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের অধীনে চিকিৎসাধীন থাকার পর তাদের পরামর্শে ২৭ এপ্রিল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গত ৩ মে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে চিকিৎসকরা তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করেন। পরে করোনা পরীক্ষায় তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এখন পোস্ট কোভিড জটিলতায় খালেদা জিয়ার পুরনো রোগ আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিকের পাশাপাশি হার্ট ও কিডনি জটিলতায় ভুগছেন। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে তার চিকিৎসা চলছে।
খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে তার মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করছেন তারা। তার শারীরিক অবস্থার খুব ধীরে উন্নতি হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে গত ১৯ মে তার ফুসফুসের পানি বের করার জন্য বুকের দুই পাশের দুই পাইপের মধ্যে বাম পাশেরটা খুলে ফেলা হয়। আর গত রোববার রাতে তার দ্বিতীয় পাইপটিও খুলে ফেলা হয়। এখন তার ফুসফুসের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি জানান, নিয়মানুযায়ী- ফুসফুসে কতটুকু পানি আসে সেটার উপর নির্ভর করছে তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ। তবে আশার কথা হচ্ছে- খালেদা জিয়ার ফুসফুস জটিলতা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। কিডনির জটিলতা এখনো কমেনি। ডায়াবেটিকস অবস্থাও অনেকটা অনিয়ন্ত্রিত। তার হার্টবিট স্বাভাবিক না হওয়ায় আরও কিছু দিন সিসিইউতে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরেকজন চিকিৎসক জানান, খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। এর উপর কয়েকমাস ধরে হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ অবস্থায় তার শারীরিক সক্ষমতা আরও বাড়ানোর জন্য ফিজিওথেরাপির অংশ হিসেবে প্রতিদিনই তাকে রুটিন করে হাঁটাচলা করানো হচ্ছে। বুধবার অন্যের সাহায্য নিয়ে তাকে ৫০ গজের মতো হাঁটানো হয়।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার ধীরে উন্নতি ঘটছে। তিনি দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন।