খবর ৭১: মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার হাবল টেলিস্কোপ তার ক্যারিশমা দেখাচ্ছে শুরু থেকেই। নতুন নতুন ছবি পাঠিয়ে জোতির্বিজ্ঞানীদে মহাকাশ সম্পর্কে নতুন কিছু ভাবার সুযোগ করে দিচ্ছে।
মহাকাশ গবেষণা সংক্রান্ত গবেষণা অনলাইন স্পেস ডট কম জানিয়েছে, সম্প্রতি হাবল টেলিস্কোপ আমাদের মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সি থেকে দূরে পাঁচটি শক্তিশালী রেডিও বিস্ফোরণের ঘটনা শনাক্ত করেছে। আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি থেকে কয়েক আলোকবর্ষ দূরে পাঁচটি ছায়াপথে এ বিস্ফোরণগুলো হয়েছে। অল্প সময়ে এ বিস্ফোরণগুলো হয় এবং উধাও হয়ে যায়। এ কারণে খুব অল্প সময়ে এদের দেখা পাওয়া সম্ভব।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায়, এ বিস্ফোরণগুলোকে বলা হয় ‘ফার্স্ট রেডিও বার্স্ট ’। নাসার বিজ্ঞানীরা এমন ১ হাজার ঘটনার কথা জানালেও এখন পর্যন্ত মাত্র ১৫টি রেডিও বিস্ফোরণের অবস্থান শনাক্ত করতে পেরেছে।
নাসার বিজ্ঞানীরা জানান, একবছরে সূর্য থেকে যে শক্তি উৎপন্ন হয় তা এ রেডিও বিস্ফোরণের ফলে এক সেকেন্ডে একই পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষক আলেকজান্দ্রা মানিকক্স জানান, এটা সবথেকে ফার্স্ট হাই রেজুলেশন ভিউ। হাবলস সেই পাঁচ ছবি প্রকাশ করেছে। এটা আমাদের গবেষণাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উৎসাহ দিচ্ছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ওয়েস্টান ইউনিভার্সিটির গবেষক এবং এ বিস্ফোরণ পরীক্ষাকারী দলের সদস্য ওয়েন ফাই ফং বলেন, আমরা সত্যি জানি না কেন এ বিস্ফোরণ হয়। কিন্তু আমরা এর খোঁজ পেয়েছি। তাই এ মহাকাশের স্বার্থেই এ উৎপত্তির কারণ আমাদের জানা উচিত।
নাসার বিজ্ঞানীরা জানান, হাবল তার ওয়াইড ফিল্ড ক্যামেরা থ্রি এর সঙ্গে প্রাপ্ত আল্ট্রাভায়োলেট এবং নেয়ার-ইনফ্রারেড আলো ব্যবহার করে এ বিস্ফোরণগুলো পর্যবেক্ষণ করেছে। ২০০৯ সালে নাসার নভোচারীরা সর্বশেষ টেলিস্কোপ সার্ভিসিং মিশনের সময় এ সুবিধাগুলো ইনস্টল করে। এ দুটি তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের সংমিশ্রণে পর্যবেক্ষণ করা গ্যালাক্সির ভর সহজে অনুমান করতে পারেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
নাসার বিজ্ঞানীদের ভাষায়, শক্তিশালী চৌম্বকীয় ক্ষেত্রযুক্ত এক ধরনের নিউট্রন কণার বিস্ফোরণের ফলে ‘ফার্স্ট রেডিও বার্স্ট’ উত্পন্ন হয়। সৌরমণ্ডলের সবথেকে শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্র এটি।
বিজ্ঞানীরা বলেন, আমাদের সূর্য থেকে এক মাসে গড়ে যে পরিমাণ শক্তি বেরিয়ে আসে প্রায় ততটা শক্তিই বেরিয়ে আসে ওই রেডিও বিস্ফোরণে। মাত্র এক সেকেন্ডের এক হাজার ভাগের এক ভাগ সময়ে। অনেকে এ বিস্ফোরণকে ‘ভিনগ্রহীদের আলো’ও বলে থাকেন।