খবর ৭১: ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত সাতজনকে চার মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সময়ের মধ্যে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসামিদের করা আপিল নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ মে) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
জামিন পাওয়া আসামিরা হলেন- গোলাম রসুল, আব্দুস সামাদ, আব্দুস সাত্তার, জহিরুল ইসলাম, রাকিব, শাহাবুদ্দিন ও মনিরুল ইসলাম। বাকি ১১ আসামির জামিনের আদেশের জন্য আগামী রোববার (৩০ মে) দিন ধার্য করেছেন।
এরআগে সোমবার (২৪ মে) সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ ১৮ আসামির জামিন আবেদনের শুনানিতে আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও অ্যাডভোকেট গাজী মহসীন।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইয়াহিয়া দুলাল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শাহীন মৃধা।
২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট সকাল ১০টার দিকে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলদি গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষণের শিকার স্ত্রীকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে দেখে যশোরে ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে রাস্তার ওপর একটি যাত্রীবাহী বাস আড় করে দিয়ে তার গাড়ি বহরে হামলা চালায়। হামলায় তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান ও সাংবাদিকসহ কমপক্ষে একডজন দলীয় নেতা কর্মী আহত হয়।
এ ঘটনায় থানা মামলা না নেওয়ায় ওই বছরের ২ সেপ্টেম্বর কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে যুবদল নেতা আশরাফ হোসেন, আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০/৭৫ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিভিন্ন আদালত ঘুরে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করা হয়। পরবর্তীতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শফিকুর রহমান ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
সাতক্ষীরা মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে বিচারাধীন পেনাল কোর্টের মামলাটি নয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর এবং সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ-২য় আদালতে বিচারাধীন অস্ত্র আইনে ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দুটির কার্যক্রম যথাক্রমে ২০১৭ সালের ৯ ও ২৩ আগস্ট আসামিপক্ষ হাইকোর্টে স্থগিত করেন।
গত বছর ৮ অক্টোবর ওই রুল খারিজ করে রায় দেন আদালত। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন রাকিবুর। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে বিচার সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। এরপর বিচার শেষে সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গত ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় বিএনপির সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ তিনজনের সর্বোচ্চ ১০ বছর করে এবং বাকি ৪৭ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেন।