খবর ৭১: এক সাংবাদিককে গ্রেফতার করতে লিথুনিয়ার পথে থাকা রায়ানায়ার এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজের গতিপথ ঘুরিয়ে মিনস্কে নামতে বাধ্য করেছে বেলারুশ সরকার। বিবিসি, এএফপি ও গার্ডিয়ানের খবরে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দেশটির টেলিগ্রাম চ্যানেল নেক্সটা মেডিয়া নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, তাদের সাবেক সম্পাদক রোমান প্রোটাসেভিচকে আটক করা হয়েছে।
পূর্ব-ইউরোপীয় দেশটির একনায়ক প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেনকোর কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত ২৬ বছর বয়সী এই সাংবাদিক। বিমানটি ঘুরিয়ে মিনস্ক জাতীয় বিমানবন্দরে নামিয়ে আনার পর তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ইউরোপীয় নেতারা এই ঘটনাকে ‘বিমান ছিনতাই’ ও ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
বোমা আতঙ্কের কারণে উড়োজাহাজটির গতিপথ ঘুরিয়ে সেটিকে মিনস্কে জরুরি অবতরণ করানো হয় বলে দাবি বেলারুশের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের। যদিও কোনও বোমা তাতে পাওয়া যায়নি।
রায়ানায়ার ফ্লাইট এফআর৪৯৭৮ গ্রিসের এথেন্স থেকে রোববার (২৩ মে) লিথুনিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে যাচ্ছিল।
কিন্তু লিথুনিয়া সীমান্তে পৌছাঁর আগে দিয়ে ফ্লাইটটিকে পূর্বদিকে ঘুরিয়ে বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে নিয়ে আসা হয়। ফ্লাইটটিতে ১৭১ জন যাত্রী ছিলেন।
রায়ানায়ার এক বিবৃতিতে বলেছে, বেলারুশের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে উড়োজাহাজে সম্ভাব্য নিরাপত্তা হুমকি থাকার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে কাছের মিনস্ক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা বলা হয়।
কিন্তু ফ্লাইটরাডার১২৪ ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, লিথুয়ানিয়া পৌঁছানোর আগে উড়োজাহাজটি পূর্বে মিনস্কের দিকে ঘুরে যাচ্ছে। কিন্তু বিমানটি মোড় নেওয়ার ওই জায়গাটি থেকে গন্তব্যস্থল ভিলনিয়াস-ই বেশি কাছে ছিল।
রায়ানায়ার জানায়, মিনস্ক বিমানবন্দরে তল্লাশির পর কিছু পাওয়া যায়নি। পাঁচ ঘণ্টা পর বিমানটিকে উড্ডয়নের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে রায়ানায়ারের বিবৃতিতে প্রোটাসেভিচের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
নেক্সটার প্রধান সম্পাদক উড়োজাহাজের এক যাত্রীর কথা টুইট করে জানান, মিন্সকে অবতরণের পর প্রোটাসেভিচ যাত্রীদেরকে তার পরিচয় দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন তারা এখানে আমার মত্যুদণ্ড দেবে।
বেলারুশের রাষ্ট্র-মালিকানাধীন গণমাধ্যম বেল্টা জানায়, বোমা সতর্কতার পর বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো ব্যক্তিগতভাবে উড়োজাহাজটি অবতরণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেটিকে পাহারা দিয়ে আনতে মিগ-২৯ যুদ্ধ বিমানও পাঠানো হয়েছিল।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রব বেলারুশ সরকারকে সতর্ক করে বলেছেন, নজিরবিহীন এই পদক্ষেপের গুরুতর পরিণতি হবে।
১৯৯৪ সাল থেকে বেলারুশ শাসন করে আসা ৬৬ বছর বয়সী আলেক্সান্ডার লুকাশেনকো গত বছর আগস্টের নির্বাচনের পর থেকে ভিন্নমতাবলম্বী ও সমালোচকদের ওপর ব্যাপক দমনপীড়ন চালাচ্ছেন। অনেক বিরোধী নেতা গ্রেফতার হয়েছেন কিংবা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন।