নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য ইবির মফিজ লেকে ‘পাট জাগ’

0
670

রুমি নোমান, ইবি প্রতিনিধি
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলা ভূমি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। সবুজের সমারোহে ঘেরা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ব্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠের সৌন্দর্যের ওপর এক নাম ‘মফিজ লেক।’ কিন্তু বহিরাগতদের অবলীলায় অনুপ্রবেশ এবং যথেচ্ছ অপব্যবহারের ফলে লেকের সৌন্দর্য এখন হুমকির মুখে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের সর্ব পশ্চিমে অবস্থিত মফিজ লেকে কৃষকরা পাশ্ববর্তী মাঠ থেকে পাট এনে জাগ দিচ্ছে আর তা পঁচিয়ে আঁশ ছাড়াচ্ছে। আবার আঁশ ছাড়ানোর পর প্রাপ্ত পাটকাঠিও শুকানো হচ্ছে লেকের পাড়েই! এর ফলে পাটের পঁচা গন্ধ পার্শ্ববর্তী খালেদা জিয়া হল, আইন অনুষদ, ব্যবসা অনুষদের শিক্ষার্থীদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। খালেদা জিয়া হলের সাজেদা আক্তার বলেন, ‘পঁচা পানির গন্ধ রুম থেকে পাওয়া যায়। ফলে সবসময় রুমের জানালা আটকে রাখতে হয়। পরিস্থিতি এমন যে লেকের পাশের রাস্তায় যাওয়াই দায়!’
জানা যায়, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বহিরাগত কৃষকরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার সুযোগ নিয়ে পাট পঁচানোর জন্য মফিজ লেক কে বেছে নেয়। লেকের পানিতে পাট পঁচানোর ফলে পানিতে হুমকির মুখে পড়েছে জীব বৈচিত্র্য। মারা যাচ্ছে লেকের মাছ সহ অন্যান্য প্রাণী। মফিজ লেক ঘুরে দেখা যায় এর পাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা দেয়াল থাকলেও, এর একটি অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখান থেকেই বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ হয় বলে জানা যায়। বিভিন্ন সময়ে বহিারাগত সন্ত্রাসী ও মাদক সেবীারা শিক্ষার্থীদের হামলা করে বলেও অভিযোগ কােরন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী।
তিন-চার বছর আগেও মফিজ লেকে শীতকালে অতিথি পাখির দেখা মিললেও বর্তমানে আর দেখা যায় না। কর্তৃপক্ষের অবহেলার সুযোগ নিয়ে বহিরাগতদের লিজ নিয়ে মাছ চাষ সহ যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলেই এমনটা ঘটছে বলে জানান ক্যাম্পাসের একাধিক শিক্ষার্থী। লেকে ঘুরতে আসা ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী ইজাবুল, জারিনরা জানান, ‘আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলেই এ স্থানটি দর্শনীয় তথা এ অঞ্চলের সেরা পিকনিক স্পটে রুপান্তর করা সম্ভব। আমরা চাই মফিজ লেক আবারো দুর্বৃত্তদের হাত থেকে মুক্ত হয়ে তার সৌন্দর্য ফিরে পাক।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেনের সাথে কথা বলা হলে তিনি বলেন,‘বার বার পদক্ষেপ নিয়েও এটি বন্ধ করা যাচ্ছে না। বহিরাগতরা মাস্তানি করে এখানে পাট জাগ দেয় এবং অনুপ্রবেশ করে।’ এসময় তিনি দেয়াল ভেঙে ফেলার কথাও স্বীকার করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো: আনোয়ারুল হক বলেন,‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ দূষণ রোধ করতে এটি বন্ধ করা জরুরী। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল সহ প্রক্টর মহোদয় কে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।খবর ৭১/ এস;

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here