মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোনার মদনে বিষপানে ঝুমা আক্তার নামে ১১ বছরের এক শিশু আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সে উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের মনিকা বিঠাবাড়ির লিটন মিয়ার মেয়ে।
শুক্রবার নিজবাড়িতে বিষপান করলে পরিবারের লোকজন তাকে মদন হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। সে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। বিষপানের মৃত্যুর বিষয়টি মেডিকেল অফিসার বুশরা আমিন নিশ্চিত করেছেন। এ ব্যাপারে মনোয়ার হোসেন (১৩) নামের এক কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ।
মা আলপিন আক্তার জানান, শুক্রবার সকালের খাবার খেয়ে বাড়ির সামনে যায়। কিছুক্ষণ পর বুমি বুমি আসতেছে বলে চিৎকার দিতে তাকে । পরে আমি তাকে মদন হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। কেন সে আত্মহত্যা করেছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান, ঈদের তিন দিন আগে রাত আনুমানিক ৯ টার সময় আমার মেয়েকে রিনা আক্তারের দোকান থেকে কয়েল আনতে পাঠাই। কয়েল নিয়ে আসার পথে মুক্তিযোদ্ধা রুক্তন মিয়ার ছেলে মনোয়ার আমার মেয়েকে জোড় পূর্বক মুখ ঝাপটে ধরে ইকু মিয়ার রান্না ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি আমার মেয়ে আমাকে জানালে গ্রামের মাতাব্বরদের জানাই। তারা শক্তিশালী থাকায় কেউ তার বিচার করেনি। তবে তারা বলেছিল আমাকে থানায় আসতে। কিন্তু আমার কোন টাকা পয়সা না থাকায় থানায় আসতে পারি নাই। গ্রামের কিছু তার সময় বয়সী ছেলে মেয়ে তাকে নিয়ে এ বিষয়ে হাসি টাট্টা করে আসছিল। সে এ বিষয়টি নিয়ে গত কয়েকদিন যাবৎ মন খারাপ করে থাকে। আমার মনে হয় এ কারনেই সে আত্মহত্যা করেছে। আমার মেয়ের সাথে যদি এমন হয়ে থাকে তবে তার বিচার চাই।
বাবা লিটন মিয়া জানান, আমার আরেক সংসার আছে। তাদের নিয়ে গ্রামের অন্য বাড়িতে থাকি। আমার মেয়ের সাথে যে এমন ঘটনা হয়েছিল আমার স্ত্রী আমাকে বিষয়টি জানিয়েছিল। আমিও এলাকার কিছু লোকজনকে বলেছিলাম। কিন্তু আমি ভাল পরামর্শ পায়নি। এ থেকেই আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। সঠিক তদন্ত করে এর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার কাজি বুশরা আমিন জানান, শিশুটিকে ভর্তি করার সময় মোটামুটি ভালই ছিল। কিছুক্ষণ পর আবার খারাপ হয়ে যায়। আমাদের মনে হয়েছে সে জমিতে দেওয়া কীটনাশক পান করেছে।
ওসি তদন্ত উজ্জ্বল কান্তি সরকার জানান,বিষপান করে ঝুমা আক্তার নামে এক শিশু মারা গেছে। তবে তার মা আলপিন আক্তার মেয়ের মৃত্যুর বিষয়ে বলছেন তার মেয়েকে নাকি ঈদের তিন দিন আগে মনোয়ার নামে এক ছেলে তার মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। এর জন্যই তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে মনোয়ারকে আটক করেছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোনা মর্গে প্রেরণ করা হবে।