খবর৭১ঃ মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় সব ধরণের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এর আগে সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০২০ এর ধারা ৩ এর উপধারা ২-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে গত ১৩ এপ্রিল এই নিষেধাজ্ঞার প্রজ্ঞাপন জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই ৬৫ দিন দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় সব প্রকার মৎস্য নৌযান দিয়ে যে কোনো প্রজাতির মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
বুধবার রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে এ বছর মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নিয়ে বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার ও মো. তৌফিকুল আরিফ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ, নৌপুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. আতিকুল ইসলাম, সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তর, চট্টগ্রাম এর পরিচালক, বন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ নৌ বাহিনী, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ, জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতি ও বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, বরিশাল, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তারা সভায় অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ কার্যক্রম বাস্তবায়নে তাদের স্ব স্ব জেলার পূর্ব প্রস্তুতি তুলে ধরেন।
এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে এ বছর দেশের উপকূলীয় ১৪টি জেলার ৬৬টি উপজেলায় ২ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯৫টি জেলে পরিবারকে ১৬ হাজার ৭২১.৩২ মেট্রিক টন ভিজিএফ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সমুদ্রে কোনো প্রকার নৌযান দিয়ে অবৈধ মৎস্য আহরণ বন্ধে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও বাংলাদেশ নৌ পুলিশ এবং বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সক্রিয় সহযোগিতা চেয়ে যথাক্রমে জননিরাপত্তা বিভাগে ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে চিঠি দিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি এ সংক্রান্ত সচেতনাতামূলক বিশেষ বার্তা টিভি স্ক্রলে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় মৎস্য অধিদপ্তর কন্ট্রোল রুম চালু করেছে এবং বরিশাল, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগে তিনটি বিভাগীয় মনিটরিং টিম গঠন করেছে। স্থানীয়ভাবে ব্যানার, লিফলেট, পোস্টার, মাইকিং ও সচেতনতামূলক সভা করে জেলেদের মাঝে প্রচার কার্যক্রম চালানো হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মৎস্যজীবী সমিতি ও সংগঠনকে এ কাজে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।