খবর ৭১
“আল আকসায় বারবার ইহুদিবাদী ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা, নিরীহ ফিলিস্তিনীদের হত্যা, নির্যাতন ও শত শত ফিলিস্তিনীদর আহত করার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি সন্ত্রাস, নির্যাতন বন্ধ ও দখলদারিত্ব অবসানে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) ও এর নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) এর চেয়ারম্যান জননেতা আলহাজ্ব শেখ সালাউদ্দিন সালু। আজ সকাল ১১টায়, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এনডিএফ আয়োজিত মানব বন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান।
তিনি বলেন, ১৯৪৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর বৃটেনের সাহায্যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ভূমি দখল করে ইসরাইল রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিন কে পরাধীন করে ফিলিস্তিন এর বাকী ভূমিগুলোকেও অব্যাহতভাবে দখলের পায়তারা করতে থাকে ইসরাইল। ১৯৬২ সাল থেকে বিনা অপরাধে ও বিনা উস্কানিতে ফিলিস্তিনিদের ওপর বিরামহীনভাবে চলছে হত্যাযঙ্গ যা আজও অব্যাহত আছে ।প্রতিদিনই কোনো না কোনো ফিলিস্তিনিকে ঘর থেকে বের করে তার ঘর বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কারো ভিটে মাটি কারো বা ফসলের জমি কেড়ে নিচ্ছে ইসরাইল। নিজ দেশেই পরবাসের মত বাঁচতে হচ্ছে তাদের।
তিনি আরো বলেন, রমজান আসলেই ইসরাইল নামক ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটি’ মুসলমানদের ওপর তার বর্বরোচিত হামলার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আর মুসলিম বিশ্ব নীরব হয়ে দেখতে থাকে একে একে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া ফিলস্তিনি, নারী, পুরুষ, শিশু, যুবক বৃদ্ধসহ বহু মানুষ। শেখ সালু হতাশ ও ক্ষোভের সাথে বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক হলো, আমরা আরব দেশগুলো থেকে যা প্রত্যাশা করেছিলাম সেভাবে কোনো পদক্ষেপেই নেয়নি তারা। ফিলিস্তিনিদের ওপর এবং আল আকসা মসজিদে হামলার বিরুদ্ধে শুধুমাত্র দু-তিনটি দেশে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। আমরা আরব দেশগুলো থেকে আরো বেশি সহযোগিতা আরো বেশি একশন প্রত্যাশা করছি। বিশেষ করে ফিলিস্তিনের প্রতিবেশী রাষ্ট্র জর্দান, সিরিয়া, লেবানন, মিশর এবং আলজেরিয়া থেকে । আমরা মনে করি সব আরব দেশ এবং মুসলিম দেশের ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। ফিলিস্তিনিদের এবং আল আকসা মসজিদ রক্ষায় তাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করা দরকার।”
তিনি বলেন, অবিলম্বে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর পরিচালিত ইহুদিবাদী ইসরাইলি নৃশংসতা বন্ধ করতে হবে। গাজায় বিমান হামলা বন্ধ করতে হবে। আল-আকসা মসজিদকে মুসলমানদের এবাদত বন্দেগির জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। ইহুদিবাদী ইসরাইলের অবৈধ দখলদারিত্ব থেকে ফিলিস্তিনকে মুক্ত করতে হবে। এ জন্য জাতিসঙ্ঘ, আরবলীগ, ওআইসিসহ বিশ্ব মুসলিম ও বিশ্ব সম্প্রদায়কে জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
মুসলিম বিশ্বের সর্ব বৃহৎ সংস্থা ওআইসি। যে ওআইসির জন্মই হয়েছিল মসজিদে আকসা এবং ফিলিস্তিনের জন্য সেই প্রতিষ্ঠানটি গত ৬ দশকে ফিলিস্তিনের জন্য কিছুই করলো না! লোক দেখানো কিছু মিটিং ফিটিং আর দায়সারা গোছের বিবৃতি দিয়েই নিজের কর্তব্য পালন করলো। আর গত এক দশকে তো নেতৃত্বের লড়াইয়ে আরও অকেজো হয় পড়েছে এই সংগঠনটি।ওআইসিতে তুরস্কের নেতৃত্ব মেনে নিতে পারেনি সৌদি আরব। তাই ইচ্ছা করেই, তুরস্কের নেতৃত্বে থাকাকালীন ওআইসিকে মূলত নিষ্ক্রিয় করে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ইসরাইলের মানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো প্রতিকার পান না ফিলিস্তিনিরা। অন্য দিকে আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে এখন আর মুসলিম চেতনা তেমন কার্যকর নেই, একইভাবে আরব জাতীয়তাবাদের চেতনাও অনুপস্থিত। এমন হামলার প্রতিকার পেতে হলে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধভাবে জোরালো প্রতিবাদ জানাতে হবে। আর বিকল্প মুসলিম শক্তি হিসেবে বাংলাদেশ, তুরস্ক, ইরান, পাকিস্তান ও মালয়সিয়াকে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে হবে।
এনপিপির যুগ্ম মহাসচিব এমাদুল হক রানার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, এনপিপির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল হাই মন্ডল, জাগপার সভাপতি এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ বাবলু, ন্যাপ-ভাসানীর চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাই সরকার, এনপিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ ইদ্রিস চৌধুরী, শেখ আবুল কালাম, মোঃ আনিসুর রহমান দেওয়ান, বাংলাদেশ ইসলামীক পার্টির চেয়ারম্যান মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ, ন্যাশনাল কংগ্রেস বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান ছাবের আহমেদ কাজী ছাব্বির, ডিপিবির চেয়ারম্যান এ্যাড জাহাঙ্গীর হোসেন, এনপিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর সভাপতি সৈয়দ মাহমুদুল হক আক্কাস, জাগপার সাধারণ সম্পাদক এ্যাড মজিবুর রহমান, এনপিপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর উত্তর এর সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান বাচ্চু।