খবর৭১ঃ মাদারীপুর ও শিমুলিয়া ফেরিঘাটে পদদলিত হয়ে পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রত্যেকের পরিবারের জন্য এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন দুই আইনজীবী।
বৃহস্পতিবার ( ১৩ মে) মানবাধিকার সংস্থা ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার ইমেইল ও কুরিয়ারযোগে এই নোটিশ পাঠান।
নোটিশের কপি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে পাঠনো হয়। জবাব না পেলে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সরকার গত ৫ এপ্রিল থেকে ১৬ মে পর্যন্ত দেশব্যাপী বিধিনিষেধ ঘোষণা করে। এতে দূরপাল্লার বাসসহ আন্তঃজেলার যাত্রীবাহী বাস বন্ধ রয়েছে। যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের নিয়মিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ নিয়োজিত রয়েছে। এতকিছুর পরেও পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনে ঘরমুখো মানুষের বাঁধভাঙা জোয়ার ঠেকানো যায়নি। হাজার হাজার মানুষ গত কয়েক দিনে পদ্মা নদী পার পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ঘাটে জড়ো হন। ফেরি বন্ধ থাকায় হাজার হাজার মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরিঘাটে অপেক্ষমাণ ছিল।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল বুধবার সীমিতসংখ্যক ফেরি চালু করলে হাজার হাজার মানুষ হুড়োহুড়ি করে ফেরিতে উঠে। ফেরির যানবাহন রাখার খোলা জায়গায় তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। প্রখর রোদের তাপে ফেরি যখন বাংলাবাজার ঘাটের কাছাকাছি আসে তখনই অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করে যাত্রীরা। পানির পিপাসায় হাঁসফাঁস করতে থাকে তারা। ফেরি ঘাটে পৌঁছলে অসুস্থ যাত্রীদের মধ্যে পাঁচজনকে মৃত পাওয়া যায়। এছাড়া অসুস্থ হয়ে পড়ে অর্ধশতাধিক যাত্রী।
নোটিশে বলা হয়, ফেরিগুলো নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিটিএ এর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থাকার পরেও কর্তৃপক্ষ সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারার ব্যর্থতার কারণেই এতগুলো প্রাণ অকালে ঝরে গিয়েছে। তারা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। দায়িত্ব পালনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলায় পাঁচজনের মৃত্যুসহ অসংখ্য মানুষ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছেন, যাদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২ অনুযায়ী জীবনের অধিকার একটি মৌলিক অধিকার। ফলে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২ সরাসরি লঙ্ঘন করেছেন।
নোটিশে আগামী তিন দিনের মধ্যে নিহত প্রত্যেককের পরিবারকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়। তাছাড়া ফেরি পারাপারের যাত্রীদের ইন্সুরান্সের আওতায় এনে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনায় ইন্সুরেন্স থেকে অর্থ প্রদানের জন্য এবং ফেরিঘাটে সংঘটিত দুর্ঘটনাটি তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের আইনি আওতায় আনার জন্য অনুরোধ করা হয়।