খবর৭১ঃ
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ কোম্পানি সিনোফার্মের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
পশ্চিমা দেশগুলোর বাইরে উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের কোনো টিকা এই প্রথম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সবুজসংকেত পেল।
এদিকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এক ডোজের টিকা এনেছে রাশিয়া।এটি স্পুটনিক-ভি টিকার আরেকটি সংস্করণ। এ টিকার নাম দেওয়া হয়েছে স্পুটনিক লাইট।
সম্প্রতি দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এই টিকার অনুমোদন দিয়েছে। রাশিয়ার টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গামালিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষকদের দাবি, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এক ডোজের এই টিকা ৭৯ দশমিক ৪ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে। খবর বিবিসি, এএফপির।
চীনা দুটি কোম্পানির তৈরি টিকার কয়েক কোটি ডোজ ইতোমধ্যে সেদেশে ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সিনোফার্মের তৈরি দুটি টিকার একটি হলো বিবিআইবিপি-করভি (BBIBP-CorV)।
রয়টার্স জানায়, এই প্রথম চীনে তৈরি কোনো সংক্রামক রোগের টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পেল। বিশ্বের অর্ধশতাধিক দেশ ইতোমধ্যে সিনোফার্মের টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে।
এদিকে স্পুটনিক লাইটের অর্থায়ন করছে রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (আরডিআইএফ)। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, স্পুটনিক লাইট করোনা আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো পরিস্থিতির আশঙ্কা কমিয়ে দিচ্ছে।
আরডিআইএফের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কিরিল দিমিত্রিয়েভ বলেন, যেসব দেশে করোনাভাইরাস দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে, সেসব দেশকে লক্ষ্য করেই এক ডোজের টিকাটি উদ্ভাবন করা হয়েছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বেশ কয়েকটি দেশে স্পুটনিক লাইট অনুমোদন পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আরডিআইএফের মতে, দুই ডোজের টিকা স্পুটনিক-ভির কার্যকারিতার (৯১ দশমিক ৬ শতাংশ) চেয়ে স্পুটনিক লাইটের কার্যকারিতা কিছুটা কম হলেও এটি মোটামুটি যথেষ্ট। ২০২০ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত গণটিকাদান কর্মসূচিতে স্পুটনিক লাইট নিয়ে পরীক্ষা চালানো হয়েছে।
ইতোমধ্যে করোনার টিকা হিসাবে ৬০টি দেশে অনুমোদন পেয়েছে স্পুটনিক-ভি। তবে এখন পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইউরোপিয়ান মেডিসিন্স এজেন্সি (এএমএ) এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনেস্ট্রেশন (এফডিএ) টিকাটির অনুমোদন দেয়নি। কিছু পশ্চিমা দেশ মনে করে, রাশিয়া নিজের প্রভাব বিস্তারে টিকাটিকে ব্যবহার করতে পারে। আর টিকাটি যথাযথ বৈজ্ঞানিক ধাপ না মেনে দ্রুত তৈরি করা হয়েছে।
রাশিয়ার টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গামালিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট তৈরি করে স্পুটনিক-ভি। এটিরও অর্থায়ন করে আরডিআইএফ।
সংস্থাটির অধীনে রাশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশে গত ফেব্রুয়ারিতে টিকাটির তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলে। আরডিআইএফ জানায়, বিশ্বের দুই কোটি মানুষ এখন পর্যন্ত স্পুটনিক-ভি টিকা গ্রহণ করেছে।