খবর৭১ঃ স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বাংলাদেশের অবস্থাও ভারতের মতো করুণ হবে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ঈদকে সামনে রেখে শপিংমল ও বিভিন্ন যানবাহনে যে ভিড় লেগেছে তাতে তিনি শঙ্কিত বলে জানান মন্ত্রী।
শুক্রবার বিকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়ায় শুভ্র সেন্টারে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দুঃস্থ মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিন যারা নিয়েছেন তারা অনেকই মনে করেন তাদের করোনা হবে না। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন এমন অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাই স্বাস্থ্যবিধি আমাদের অবশ্যই মানতে হবে। ঈদকে সামনে রেখে যেভাবে মানুষ তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দোকানপাটে ভিড় করছে, তাতে আমি শংকিত। ফেরিঘাটে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই। প্রতিটি ফেরিতে শত শত মানুষ পার হচ্ছে। এতে করে করোনাভাইরাস ছড়াতে বেশি সময় লাগবে না। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আমাদের অবস্থা ভারতের মতো খারাপ হবে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল। হঠাৎ করেই আবার করোনা বেড়ে গেছে। প্রথম দিকে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য দেশে দুই হাজার বেড ছিল। আর এখন সারাদেশে রয়েছে মোট ১৩ হাজার বেড। গত এক বছরে সারাদেশে ১৩০টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশে একটি মাত্র ল্যাবে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল। বর্তমানে সারাদেশে ৪০০ ল্যাবে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে এখনো ওষুধ ও অক্সিজেনের অভাব হয়নি। প্রতিদিন আমাদের গড়ে ৭০ থেকে ৮০ টন অক্সিজেন লাগে। দেশে অক্সিজেন উৎপাদন হচ্ছে ২০০ টন। আগামী মাসে আরও ৪০ টন অক্সিজেন উৎপাদন হবে। এতে আমাদের অক্সিজেনের অভাব হবে না। বেশি সংক্রমিত হলে হাসপাতালে জায়গা থাকবে না, অক্সিজেন থাকবে না। এতে যে কী সমস্যা হবে তা বলে বোঝানো যাবে না।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভ্যাকসিন আনার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা চীন ও রাশিয়ার সাথে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছি। আশা করি আমরা খুব তাড়াতাড়ি ভ্যাকসিন পেয়ে যাব।’
জাহিদ মালেক বলেন, সারাদেশে লকডাউন চলছে, এতে অনেক মানুষ কষ্টে আছে। সরকারিভাবে মানুষকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এই ক্রান্তিকালে সমাজের বিত্তবানদের মানুষের পাশে দাঁড়ানো আহ্বান জানান তিনি।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফসার উদ্দিন সরকারের সঞ্চালনায় এসময় অন্যান্যের মধ্যে জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস, পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মহীউদ্দীন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ ফটো, যুগ্ম সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সুদেব সাহা, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোনায়েম খান, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক আবু বকর সিদ্দিক খান তুষার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সদর ও সাটুরিয়া উপজেলার দুই হাজার দুস্থ পরিবারের মাঝে চাল, ডাল, আলু, তেল, লবণ ও চিনি বিতরণ করা হয়।