খবর৭১ঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভিসি এম আবদুস সোবহানের শেষ কর্মদিবসে নিয়োগকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ১২টায় রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
কয়েক দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্য এবং নানা অনিয়ম নিয়ে ছাত্রলীগ ও শিক্ষকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
এদিকে গত ৫ মে ভিসি অস্থায়ী ভিত্তিতে (অ্যাডহক) বিশাল জনবল নিয়োগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে পুলিশ প্রটোকলে বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় ক্যাম্পাস ছেড়েছেন ভিসি এম আবদুস সোবহান। পথিমধ্যে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেটুকু দায়িত্ব পেয়েছিলাম যথাযথভাবে পালন করেছি।’
অ্যাডহক নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি। শুধু বলেছেন, নিয়োগ হয়ে থাকলে পরে জানতে পারবেন। দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের সহযোগিতার কথা স্মরণ করে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন ভিসি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ভিসির বিদায় বেলায় টাকার বিনিময়ে ১২৫ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে নিয়োগ দিয়েছেন বলে প্রচার শুরু হলে মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। পরে তাদের ওপর হামলা চালায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। পরে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া প্রায় আধাঘণ্টা চলতে থাকে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে আরও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
একপর্যায়ে মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যায়। এতে ৫ জন আহত হয়েছেন। তারা হলেন- সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আব্দুল্লাহ আল মামুন, সেকশন অফিসার মাসুদ, রাবি ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও ক্রীড়া বিভাগের সহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান চঞ্চল। বাকি দুজনের পরিচয় জানা যায়নি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার আব্দুস সালামকে অব্যাহতি দিয়ে আব্দুল্লাহ আল মামুনকে নিয়োগের মাধ্যমে অস্থায়ী ভিত্তিতে ১২৫ জনকে নিয়োগ দিয়ে বিদায় নিয়েছেন ভিসি এম আবদুস সোবহান বলে জানা গেছে।
এই প্রতিবেদকের কাছে একটি প্রজ্ঞাপন হাতে এসেছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট-১৯৭৩-এর ১২(৫) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে অস্থায়ী ভিত্তিতে ছয় মাসের জন্য নিয়োগ দেওয়া হলো।
হামলার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা কামরুজ্জামান চঞ্চল যুগান্তরকে বলেন, নিয়োগ নিয়ে মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সেকশন অফিসারদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি করেন। সেখানে আমি নিবৃত্ত করার চেষ্টা করি। ওই সময় মহানগর ছাত্রলীগের কর্মীরা আমার ওপর হামলা করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ নেতাকর্মী ও অফিসাররা একযোগে তাদের ধাওয়া করে ক্যাম্পাস থেকে তাড়িয়ে দেন।
সাবেক রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম বলেন, নিষেধাজ্ঞা থাকা অবৈধ নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো বিষয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই। নিয়োগ হয়েছে কিনা সেটাও আমার জানা নেই।
সামগ্রিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ৭ মে রাবির ভিসি হিসেবে দ্বিতীয়বার চার বছরের জন্য নিয়োগ পান ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান।