খবর৭১ঃ পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার ভোটের ফলাফলে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু নন্দীগ্রামে নিজ আসনে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে ভোটে পিছিয়ে রয়েছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। রোববার ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ভোটের ফলাফলে দেখা যায় বিজেপির প্রার্থী শুভেন্দু পেয়েছেন ৬২ হাজার ৬৭৭ ভোট। আর মমতা বন্দোপাধ্যায় পেয়েছেন ৫২ হাজার ৮১৫ ভোট।
বিধানসভার মোট আসন ২৯৪টি। এর মধ্যে ২০৯টি আসন পেয়ে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। অপরদিকে ৮০টি আসন পেয়েছে বিজেপি।
আসন সংখ্যায় তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও কঠিন চ্যালেঞ্জে পড়েছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।
ভারতের সংবিধানের আর্টিকেল ১৬৩ ও ১৬৪ অনুযায়ী, কাউকে মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্যের মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হতে চাইলে বিধানসভার সদস্য হতে হবে। ওই ধারায় বলা হয়েছে, রাজ্যের বিধানসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতারাই মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করবেন। আরও বলা হয়েছে, টানা ছয় মাস মন্ত্রী কিংবা মুখ্যমন্ত্রী থাকতে গেলে তাকে রাজ্যের কোনো একটি আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। অন্যথায় ১৮০ দিন পর তার পদ বাতিল হয়ে যাবে।
সংবিধানের এসব ধারা অনুযায়ী, তৃণমূল কংগ্রেসকে ক্ষমতা ধরে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে হেরে যান তাহলে তিনি অন্য কোনো একটি আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে আসতে ৬ মাস সময় পাবেন। সেক্ষেত্রে দলের কোনো এক সদস্যকে পদত্যাগ করে তার আসনটি শুন্য করে দিতে হবে। আর সেখান থেকেই নির্বাচন করে রাজ্যের ২৯৪ আসনের বিধানসভার আইনপ্রণেতা নির্বাচিত হবেন তিনি।
বিধান সভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে গত ১ এপ্রিল নন্দীগ্রামে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
ভারতীয় পত্রিকাগুলো বলছে, পশ্চিমবঙ্গের দুবারের মুখ্যমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত এই আসনে হেরে গেলে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তাকে ঘিরে বিরোধীদের বৃহত্তর জোটের যে পরিকল্পনা দানা বাঁধছিল, তা মুখ থুবড়ে পড়বে বলে অনেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কেবল তাই নয়, মমতা যদি হেরেই যান, আর তার দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়, সেক্ষেত্রে তৃণমূল কাকে মুখ্যমন্ত্রী করবে তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা।
মমতা মুখ্যমন্ত্রী হতে না পারলে তার ভাইপো অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে এ পদে দেখা যেতে পারে। আবার প্রার্থীর মৃত্যুতে বেশ কয়েকটি আসনে ভোট স্থগিত থাকায় এবং একটি আসনে তৃণমূলেরই মৃত প্রার্থী এগিয়ে থাকায় মমতাকে জিতিয়ে আনার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচিতদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ যাকে তাদের নেতা হিসেবে নির্বাচিত করবে, তিনিই পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন।
মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিতদের কেউ না হলে ১৮০ দিনের মধ্যে তাকে কোনো একটি আসন থেকে জিতে আসতে হবে। তা না পারলে ছেড়ে দিতে হবে পদ।
সে হিসেবে স্বাভাবিকভাবে মমতাকেই তৃতীয় মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পেতে পারে পশ্চিম বাংলার জনগণ।