খবর ৭১: বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন করোনা দুর্যোগের মধ্যেও দেশের শ্রমিকশ্রেণী মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে যেভাবে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রেখেছে সরকার ও মালিকেরা তার জন্য তাদেরকে ন্যায্য পাওনা দেয়নি। মহামারীতে উৎপাদন অব্যাহত রাখার জন্য শ্রমিকেরা কোন প্রণোদনা বা ঝুঁকি ভাতা পায়নি। রাষ্ট্র সরকার এজন্যে তাদেরকে কোন সম্মান বা মর্যাদাও দেয়নি; বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদের সাথে অমানবিক ও নিষ্ঠুর আচরণ করা হচ্ছে। গার্মেন্টসসহ অধিকাংশ শিল্প কারখানায় এখনও শ্রমিকদের প্রাপ্য মজুরী ও উৎসব ভাতা প্রদান করা হয়নি। তিনি আগামী ৭ এপ্রিলের মধ্যে সকল খাতের শ্রমিক কর্মচারীদের বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, উৎপাদন বাড়ানোর বাইরে সরকার ও মালিকদের কাছে শ্রমিক-কর্মচারীদের বিশেষ কোন মূল্য নেই। ভোটের অধিকার না থাকায় শ্রমজীবী মানুষ আেেরা গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। শ্রমিকদের বাঁচার জন্য ন্যায্য আন্দোলনকে নানাভাবে দমন করা হচ্ছে। রোজার মাসে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বর্বরোচিতভাবে শ্রমিক হত্যা করা হয়েছে। শ্রমিকদের দাবি দাওয়ার ন্যায্য আন্দোলনের বিরুদ্ধেও পুলিশ ও মাস্তান লেলিয়ে দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন কাগজে কলমে সরকার ও মালিকেরা শ্রমিকদের কিছু কিছু অধিকার স্বীকার করে নিলেও বাস্তবে তার কার্যকরি প্রয়োগ নেই। এখনও শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরী নেই, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নেই। শ্রমিকেরা এখনও করোনা টিকা কার্যক্রমের বাইরে। শ্রমিকের জীবন ও নিরাপত্তা এখনও সরকার ও রাষ্ট্রের অগ্রাধিকারের মধ্যে নেই। তিনি বলেন, এই অবস্থার বদল ঘটাতে হলে শ্রমজীবী- মেহনতি মানুষ রাজনৈতিক ভাবে সংগঠিত হতে হবে এবং সাম্যভিত্তিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
মে দিবস উপলক্ষে আজ সকালে সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে ‘করোনা মহামারী ও বাংলাদেশের শ্রমিকশ্রেণী’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতি হিসেবে তিনি উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
এই আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, সংহতি সংস্কৃতি সংসদের সভাপতি ইফতেখার আহমেদ বাবু সোনার বাংলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হারুন অর রশীদ, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির কার্যকরি সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, বিপ্লবী পাদুকা শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইমরান, বিপ্লবী ছাত্র সংহতির বিপ্লবী হোসেন খান, খেতমজুর ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
সভায় বহ্নিশিখা জামালী বলেন, করোনায় দেশের শ্রমিকশ্রেণী বিশেষ করে শ্রমজীবী নারীরা বহুমুখী সংকটে পড়েছে।
ইফতেখার আহমেদ বাবু বলেন, শ্রমিকশ্রেণীকে রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিবর্তনের দিশা দেখাতে হবে।