খবর৭১ঃ আমরা যে সমাজে বাস করি সেই সমাজে রোজা রাখা একটি মৌসুমী ব্যাপার। অনেকেই রোজা রাখতে অভ্যস্ত নয়। আবার অনেকেই বিভিন্ন রোগের কারণে, বয়ঃবৃদ্ধির কারণে অথবা ব্যস্ত থাকার কারণে, রোজা ছাড়া অন্য সময়ে যে খাবার রুটিন আছে, সেই রুটিনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন।
এমন অবস্থায় কেউ যখন সেহরি খেয়ে রোজা রাখল, তারপর রোজা অবস্থায় আগের অভ্যাসের কারণেই হোক অথবা সম্পূর্ণ বেখেয়ালেই হোক, রোজার কথা ভুলে গিয়ে সে যদি কোনো কিছু পান করে অথবা খেয়ে ফেলে, তাহলে তার রোজার কী অবস্থা হবে?
এর সোজাসাপ্টা জবাব হলো, তার রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। অর্থাৎ তার উচিত রোজা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং নিয়মমতো ইফতার করে রোজা ভঙ্গ করা। তাহলে তার রোজা কোনো ধরনের ক্ষতি ছাড়াই পূর্ণাঙ্গ হয়ে যাবে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একটি হাদিস আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ভুলে গেল যে সে রোজাদার, অতঃপর পান করলো বা আহার করলো, ওই ব্যক্তি যেনো তার রোজা পূর্ণ করে, কেননা আল্লাহ তাকে খানা খাইয়েছেন, আল্লাহ তাকে পান করিয়েছেন।’ (বুখারী, হাদিস নং-৬৬৬৯, ও মুসলিম, হাদিস নং-১১৫৫)
তবে কোনো রোজাদার যদি পানি এক ঢোক পানের পর রোজা রাখার কথা স্মরণ হয়, কিংবা আহার করা শুরু করে হঠাৎ রোজা থাকার কথা মনে পড়ে, তাহলে সেই ক্ষেত্রে যতটুকু পানি পান করেছে, অথবা যতটুকু আহার গিলে ফেলেছে, সেটুকু তো গিলে ফেলেছেই, মুখে থাকা বাকি পানি অথবা খাবার ফেলে দিয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে এবং তার রোজা চালিয়ে যাবে, নিয়মমতো ইফতার করবে। এতে তার রোজার কোনো ক্ষতি হবে না।
আমাদের ঘরে থাকা অথবা বাইরে থাকা কোনো রোজাদার কেউ যদি পানি বা আহার গ্রহণ করা অবস্থায় দেখে, বা গ্রহণ করতে উদ্যত হতে দেখে, তখন তাদের উচিত, তাকে রোজার কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া। এই স্মরণ করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সে যদি রোজাদার হয়ে থাকে, তাহলে পানি পান বা খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকবে। এই স্মরণ করিয়ে দেওয়ার কারণে যে ব্যক্তি স্মরণ করিয়ে দিলো, সেও রোজাদারের সঙ্গে সমভাবে সওয়াব পাবে। এতে রোজাদারের সওয়াব কমবে না।
উল্লিখিত হাদিসের মাধ্যমে আমরা যা বুঝতে পারলাম তা হচ্ছে, যদি কেউ ভুল করে পানি বা আহার গ্রহণ করে, সেটা আল্লাহই তাকে গ্রহণ করিয়েছেন। এটার জন্য তার করার কোনো কিছু ছিল না, সে সম্পূর্ণ বেখেয়ালে ভুলে গিয়ে পানাহার করেছে, তাই তার রোজার ক্ষতি হবে না।
আল্লাহ আমাদের জেনে-বুঝে রোজা পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।