খবর৭১ঃ ভারতে ব্যাপকভাবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানার পর ভাইরাসটির সংক্রমণ এড়াতে ভারতের সঙ্গে স্থলপথে সব সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার (২৬ এপ্রিল) থেকে আপাতত ২ সপ্তাহের জন্য ভারতের সঙ্গে স্থল সীমান্তে যাত্রী চলাচল বন্ধ থাকবে।
গতকাল রবিবার (২৫ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু ভারতে সংক্রমণ বেড়ে গেছে, তাই আমরা স্থলবন্দর ও সীমান্ত থেকে মানুষের যাতায়াত দুই সপ্তাহ বন্ধ রাখতে চাইছি। তবে এইসময়ে মানুষের যাতায়াত বন্ধ থাকলেও পণ্যবাহী যানবাহন চলবে।’
ভারতে গত ৪-৫ দিন ধরেই দৈনিক শনাক্ত ৩ লাখ আর দৈনিক মৃত্যু ২ হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে দেশটির সঙ্গে আরও আগেই বিমান চলাচল বন্ধ করেছে বাংলাদেশ। এরপর স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা ভারতের সঙ্গে কিছু দিনের জন্য স্থল সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে সীমান্ত বন্ধের এ সিদ্ধান্ত আসে।
এদিকে রবিবার বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্য অধিদফতরের আয়োজিত এক আলোচনা সভার পর স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক আবুল বাশার খুরশীদ আলম বলেন, ‘নতুন কোনও বিপর্যয় এড়াতে এখন ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ রাখা উচিত। এ বিষয়ে আমাদের মতামত আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। যদিও সরকারের ওপরের মহল থেকেই এ সিদ্ধান্ত আসবে।’
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪ হাজার কিলোমিটারের বেশি সীমান্ত রয়েছে।
আক্রান্তে ব্রাজিলকে টপকে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসা বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারত মৃত্যুতে রয়েছে চতুর্থ অবস্থানে। ভারতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের যে দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে, তার পেছনে কোভিড-১৯’র নতুন ধরন ‘ডাবল মিউট্যান্ট’ কাজ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যে কারণে দেশটি ইতোমধ্যে ব্রাজিলকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমণের দেশে পরিণত হয়েছে। এখন ভারতের আগে রয়েছে কেবল যুক্তরাষ্ট্র।
ভারতে ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দেড় কোটি ছাড়িয়েছে আর মৃত্যু হয়েছে পৌনে ২ লাখেরও বেশি মানষের।
বাংলাদেশ ও বৈশ্বিক তথ্য-উপাত্ত মূল্যায়ন করে একদল বিশ্লেষক বলছেন, করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ধরণ বাংলাদেশে প্রবেশ করলে পরিস্থিতির চরম অবনতির আশঙ্কা আছে।
বিশ্লেষক দলের প্রধান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইন্সটিটিউটের শিক্ষক ড. শাফিউন নাহিন শিমুল বলেন, ‘ভারতের সাথে বাংলাদেশের বিশাল সীমান্ত। তাই আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ যতই বন্ধ থাকুক- তাকে সেদেশের ভাইরাস বাংলাদেশে আসবে না, এর কোনও নিশ্চয়তা নেই।’