স্টাফ রিপোটার,বাগেরহাট
বাগেরহাটের চিতলমারীতে বোরা ধান কাটা শুরু হয়েছে। পাঁকা ধান কাটতে নতুন কাস্তে কিনতে কামারের দোকানে কৃষকদের ভিড় পড়েছে। ধান কাটতে এ উপজেলায় বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে মজুররা আসছেন। সব মিলিয়ে এ অ লের কৃষাণ-কৃষাণীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
চিতলমারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে মোট ২১টি ব্লক রয়েছে। একুশটি ব্লকে এবছর বেরো মৌসুমে ২৮ হাজার ৫২৮ একর জমিতে হাইব্রিড ও ৩৮৩ একর জমিতে উফশী জাতের ধান চাষ হয়েছে। এখানের প্রায় ৩০ হাজার পরিবার এই ধান চাষের সাথে জড়িত। এই ধানের উপর তাদের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড অনেকটা নির্ভর করে। প্রথমদিকে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ বছরও ধানের বাম্পার ফলন আশা করা হয়েছিল। কিন্তু উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধান পাকার আগ মুহূর্তে ক্ষেতে কারেন্ট পোকার (মৌয়া) আক্রমণ দেখা দেয়। স্থানীয় কৃষি বিভাগ কারেন্ট পোকার আক্রমণে ধান চাষিদের আতঙ্কিত না হয়ে পোকার হাত থেকে ধান ক্ষেত রক্ষার জন্য কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন। এর কিছু দিন পরেই ঝড়ো বাতাস ও অতিরিক্ত তাপমাত্রায় বোরো ধানের অনেক ক্ষতি হয়। প্রায় ৫০০ একর ধানের জমিতে এ ক্ষতি হয়েছে। তারপরও সকল প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে জয় করে কৃষক ধুমধামের সাথে বোরো ধান কাটতে শুরু করেছেন। আগামী ১০-১৫ দিন ঝড়-বৃষ্টি না হলে কৃষকরা উৎপাদিত ধান শান্তিতে গোলায় তুলতে পারবেন।
উপজেলার পাটরপাড়া গ্রামের ইউনুস বিশ্বাস, সুরশাইলের শুভ্র শেখ, মুন্না শেখ, খড়মখালীর পরিতোষ মজুমদার, খলিশাখালির শিপলু বিশ্বাস, আদিখালির এনায়েত মিয়া ও কুরমনির বুদ্ধ বসু, বলরাম বিশ্বাস ও পরিমল বিশ্বাসসহ ধান চাষিরা বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে বলেন, অনেক খড়-কুটো জ্বালিয়ে আমরা এ বছর বোরো ধান উৎপাদন করেছি। অনেকের ধান কাটা শুরু হয়েছে। আগামী ১০-১৫ দিন ঝড় বৃষ্টি না হলে আমরা ধান শান্তিতে ঘরে তুলতে পারব। আর ন্যায্যমূল্য পেলে মিটবে ধারদেনা।
এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার বলেন, আমরা সব সময়ই ধান চাষিদের খোঁজ-খবর রাখছি। এ উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার কৃষক পরিবার রয়েছে। কারেন্ট পোকা ও অতিরিক্ত তাপমাত্রায় বোরো ধানের কিছু ক্ষতি হলেও ধান কেটে ঘরে তোলার আগে পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে কৃষকরা ভাল ফলন পাবেন।