খবর৭১ঃ সৌরজগতের মঙ্গলগ্রহে অক্সিজেন তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।মঙ্গলগ্রহটি অতি শীতল। সেখানে মানুষ বসবাস করার জন্য উপযুক্ত নয়। তবে সেখানে জীবন ধারণের পথে এক ধাপ এগিয়ে গেছে নাসা। গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে ৯৫ শতাংশই কার্বন ডাই-অক্সাইড। সেই কার্বন ডাই-অক্সাইড সংগ্রহ করেছে নাসা। সেখান থেকেই শ্বাসযোগ্য বিশুদ্ধ অক্সিজেনে পরিণত করেছে।
বুধবার নাসা জানিয়েছে, পৃথিবী থেকে সাত মাস আগে মঙ্গলযান পারসেভারেন্সকে পাঠানো হয়েছে। সেটি ১৮ ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলের বুকে অবতরণ করে। ওই যানটির মাধ্যমেই সৌরজগতের লোহিত গ্রহ মঙ্গলের কম ঘনত্বের বাতাস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে তা সফলভাবে অক্সিজেনে রূপান্তরিত করেছে।
সংস্থাটি দাবি করেছে, মঙ্গলে যন্ত্রাংশটি ৫ গ্রামের মতো অক্সিজেন তৈরি করেছে মঙ্গলবার। এই পরিমাণ একজন মহাকাশচারীর প্রায় ১০ মিনিটের শ্বাসের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের সমপরিমাণ।
তারা আগামী দুই বছরে আরও অন্তত নয়বার যন্ত্রটির পরীক্ষা চালাবেন। তাও বিভিন্ন জায়গায়, গতিতে ও পরিস্থিতিতে করা হবে এই পরীক্ষা।
নাসার বিজ্ঞানীরা বলেছেন, মঙ্গলের পাতলা বায়ুমণ্ডলের ৯৫ শতাংশই কার্বন ডাই-অক্সাইড। বাকি ৫ শতাংশ নাইট্রোজেন ও আর্গন। এর মধ্যে আর্গন হলো নিষ্ক্রিয় গ্যাস। মঙ্গলে অক্সিজেনও আছে, তবে তা উপেক্ষণীয় মাত্রায় কম।
বর্তমানে মঙ্গলগ্রহের আবহাওয়া বেঁচে থাকার অনুকূল নয়। সেখানে আবহাওয়া এতই ঠাণ্ডা যে পানি সেখানে তরল অবস্থায় থাকতে পারে না। বায়ুমণ্ডলও এতই পাতলা যে চড়া আলোকরশ্মির বিকিরণ মাটির উপরিভাগের সবকিছু ধ্বংস করে ফেলে।
কিন্তু সবসময় মঙ্গলের পরিবেশ এমনটা ছিল না। সাড়ে তিনশ কোটি বছর কিংবা তারও আগে সেখানে পানি প্রবাহ ছিল। বিভিন্ন যেসব খাঁড়ি দিয়ে পানি প্রবাহিত হতো, তার ছাপ এখনও গহ্বরের বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়। ক্ষতিকর বিকিরণ ঠেকানোর জন্য আবহাওয়া মণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের ঘন আস্তরণও ছিল।
প্রাণের অস্তিত্বের জন্য যেহেতু পানি গুরুত্বপূর্ণ, তাই মনে করা হয় মঙ্গল গ্রহে একসময় জীবন ছিল।
মঙ্গলের মাটিতে এখনও কোনো প্রাণের লক্ষণ আছে কিনা, তা দেখতে ১৯৭০ এর দশকে ওই গ্রহে ভাইকিং নামে একটি মহাকাশ মিশন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাদের ফলাফল কিছু প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়।