সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরে স্বামীসহ স্বামীর শ্বশুর-শ্বাশুড়ী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের শারীরিক অত্যাচার-নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়ে মেরিনা মান্নান মেরি নামে এক গৃহবধূ স্থানীয় ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সকালে লক্ষণপুর স্কুল ও কলেজের জীববিদ্যা বিষয়ের প্রভাষক দুই ছেলে সন্তানের জননী ওই গৃহবধূ স্বামীসহ শ্বশুর-শ্বাশুড়ী’র অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ৯৯৯ এ কল দিলে পুলিশের সহযোগিতায় নির্যাতন থেকে রেহাই পান। স্বামী জোবায়দুল হোসেনের পরকীয়া’য় বাঁধা দেওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে যৌতুকের দাবি তুলে স্বামীসহ শ্বশুর-শ্বাশুড়ী দীর্ঘদিন থেকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,সৈয়দপুর উপজেলার তিন নম্বর বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী মাঝাপাড়া গ্রামের খায়রুল বাশারের ছেলে মো. জোবায়দুল হোসেনের সঙ্গে একই ইউনিয়নের লক্ষনপুর ডাঙ্গারহাটের আব্দুল মান্নানের মেয়ে মেরিনা মান্নান মেরি প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হয়। প্রায় ১৩ বছরের সংসার জীবনে তাদের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। এদের মধ্যে প্রথম ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে এবং দ্বিতীয় ছেলের বয়স আড়াই বছর। গৃহবধূ মেরি বর্তমানে লক্ষণপুর স্কুল এন্ড কলেজে জীববিদ্যা বিষয়ের প্রভাষক পদে রয়েছেন।
গতকাল সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের ৩য় তলায় মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের এক নম্বর কেবিনের চিকিৎসাধীন গৃহবধূ প্রভাষক মেরিনা মান্নান মেরি অভিযোগ করে বলেন, অপসোনিন ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত স্বামী জোবায়দুল পরকীয়ায় আসক্ত। এ নিয়ে শ্বশুর-শ্বাশুড়ীকে একাধিকবার অবহিত করা হয়। কিন্তু তাদের বিষয়টি জানালে উল্টো তারা আমার ওপর রাগান্বিত হন। এছাড়াও বিয়ের পর থেকে স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন আমাকে যৌতুকের জন্য নানাভাবে চাপ দিয়ে আসছিলেন। প্রায়ই তারা আমাকে বলেন, ছেলের অন্যত্র বিয়ের কথা হচ্ছিল, সেখানে একটি প্রাইভেট কার দিতে চেয়েছিল মেয়ে পক্ষ। তাই তুমি বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক নিয়ে আসো। এভাবে দীর্ঘ প্রায় ১৩ বছর ধরে স্বামী ও শ্বশুর-শ্বাশুড়ীসহ তার পরিবারের লোকজনের আমাকে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার নির্যাতন করে আসছে। তাদের অত্যাচার নির্যাতনে আমি কয়েকবার বাবার বাড়িতে চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমার স্বামী অনেক বার নানা রকম ছল-চাতুরির আশ্রয় নিয়ে আমাকে বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে আসে। সর্বশেষ এখন স্বামী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা আমাকে কলেজের চাকুরি ছেড়ে দেওয়ার জন্য নতুন করে চাপ সৃষ্টি করছে। এ নিয়ে প্রায়ই তারা আমার ওপর নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন করছে। তারই ফলশ্রুতিতে গত শুক্রবারও আমার ওপর নেমে আসে শ্বশুর-শ্বাশুড়ীসহ পরিবারের সদস্যদের শারীরিক নির্যাতন। প্রভাষক গৃহবধূ মেরি হাসপাতালে শয্যায় শুয়ে স্বামী ও শ্বশুর-শ্বাশুড়ীর দৃষ্টান্তমূলত শাস্তি দাবি জানান।