খবর৭১ঃ শিশু বক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। গাজীপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শেখ নাজমুন নাহার বৃহস্পতিবার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শনিবার কাশিমপুর কারাগার থেকে গাছা থানায় আনা হবে তাকে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপির) গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন আদালতের সহকারী কমিশনার শুভাশীষ ধর জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার কথিত ‘শিশু বক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত মঙ্গলবার সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে গাছা থানা পুলিশ। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শেখ নাজমুন নাহার বৃহস্পতিবার ভার্চুয়ালি শুনানি গ্রহণ করেন। শুনানি শেষে তিনি রফিকুল ইসলাম মাদানীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গ্রেপ্তার রফিকুল ইসলাম বর্তমানে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ তে বন্দী রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ৮ এপ্রিল গাছা থানায় এবং ১১ এপ্রিল জিএমপির বাসন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুইটি মামলা করা হয়।
ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, ৭ এপ্রিল ভোরে ‘শিশু বক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীকে (২৬) নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার লেটিরকান্দা এলাকার বাড়ি থেকে আটক করেন র্যাব-১ এর সদস্যরা। ওই দিন রাতেই গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়। ৮ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন র্যাব-১ এর নায়েক সুবেদার (ডিএডি) আব্দুল খালেক। এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
আটককালে রফিকুল ইসলাম মাদানীর কাছ থেকে চারটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। তিনি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। এছাড়াও জব্দ মোবাইল ফোনে আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ ‘এডাল্ট কনটেন্ট’ অশ্লীল ভিডিও চিত্রসহ পর্নোগ্রাফি পাওয়া গেছে। এসব এডাল্ট ছবি ও ভিডিও তিনি নিয়মিত দেখতেন এবং সেগুলো স্টোর করতেন ও লিংক দিতেন। এজন্য রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮(৫)(ক) ধারা সংযোজন করা হয়েছে। এ মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলে আদালত বৃহস্পতিবার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
প্রসঙ্গত, ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানী বিভিন্ন মাহফিলে রাষ্ট্র তথা সরকারবিরোধী ও আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থী উস্কানি ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ডিজিটাল মাধ্যমে দেন। যা তার নির্দেশে ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পায়। রফিকুল ইসলাম মাদানীর উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে তার অনুসারীরা গত ২৬ মার্চ ঢাকা বায়তুল মোকাররম মসজিদ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতা করে। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটে।