খবর৭১ঃ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে আফগানিস্তানে দুই দশকের সবচেয়ে দীর্ঘ যুদ্ধ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার ২০তম বার্ষিকীর আগেই আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছেন তিনি।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার জেরে হোয়াইট হাউজের এ কক্ষ থেকেই বিমান হামলার ঘোষণা দেয়া হয়। ২০ বছর পর ঠিক সেই একই জায়গা থেকে আফগানিস্তানে দীর্ঘ যুদ্ধের অবসানের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
আফগানিস্তানকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা বললেও যে কোনো আক্রমণ প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে তালেবানকে সতর্ক করেছেন বাইডেন। খবর রয়টার্সের।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ১১ সেপ্টেম্বর নাগাদ আফগানিস্তান থেকে তার সব সৈন্য প্রত্যাহার করে নিচ্ছে কারণ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও পেন্টাগন আক্রমণের দু’দশক পরেও সেখানে থাকার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
হোয়াইট হাউজ তার ভাষণের যে উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে সেখানে বাইডেন বলছেন, ‘আমরা আফগানিস্তানে গিয়েছিলাম কারণ ২০ বছর আগে ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছিল কিন্তু সেটা কোন যুক্তি হতে পারে না যে আমরা এই ২০২১ সালেও সেখানে কেন থাকব।’
বাইডেন বলেন, ‘আমরা আফগানিস্তানে আমাদের উপস্থিতির সময় বৃদ্ধি কিংবা উপস্থিতিকে সম্প্রসারিত করতে পারি না এই আশায় যে আমাদের সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য একটা আদর্শ সময় আসবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের এই নেতা বলেছেন তিনি হচ্ছেন চতুর্থ প্রেসিডেন্ট যিনি আফগানিস্তানে আমেরিকান সৈন্যের উপস্থিতি তদারকি করছেন এবং সংকল্প প্রকাশ করেন যে তিনি এই দায়িত্ব আর পঞ্চম প্রেসিডেন্টের কাছে চাপিয়ে দেবেন না।
বাইডেন বলেন, ‘আমাদের মিত্র এবং সহযোগীদের সঙ্গে, আমাদের সামরিক নেতাদের সঙ্গে, পেশাজীবি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে, কংগ্রেস এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে নিবিড় পরামর্শের পর, আমি এই উপসংহারে পৌঁছেছি যে এখনই সময় এই দীর্ঘতম যুদ্ধের অবসান ঘটানোর। তবে তিনি বলেন যুক্তরাষ্ট্র কুটনৈতিক ও মানবিক কর্মকান্ডে আফগানিস্তানে কাজ করে যাবে এবং কাবুল সরকারকে সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে।’
চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সৃষ্ট নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মার্কিন নীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন জো বাইডেন। ঐতিহাসিক এ ঘোষণার পরপরই আরলিংটনের জাতীয় স্মৃতিসৌধে সম্প্রতি বিভিন্ন সময়ে নিহত মার্কিন সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি।
সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে শান্তি আলোচনা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে আফগান সরকার। নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আফগানিস্তান বর্তমানে প্রস্তুত বলে জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি।