সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে নীলফামারীর সৈয়দপুরের গতকাল ১২ এপ্রিল (সোমবার) স্থানীয় শহীদ দিবস পালিত হয়েছে।
সকাল সাড়ে ৮ টায় শহরের শহীদ জিকরুল হক সড়কের শহীদ স্মৃতি অম্লান চত্বরে জাতীয় ও সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলন মধ্যদিয়ে স্থানীয় শহীদ দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। পরে সকাল সোয়া ৯ টায় প্রথমে সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন এবং সাধারণ সম্পাদক মো. মহসিনুল হক মহসিন শহীদ স্মৃতি অম্লানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। পরে একে একে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সন্তানদের সংগঠন প্রজন্ম ’৭১ সৈয়দপুর উপজেলা শাখা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড, সৈয়দপুর হিন্দু কল্যাণ সমিতি ও কেন্দ্রীয় শ্মশান কমিটির নেতৃবৃন্দ শহীদ স্মৃতি অম্লানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় সৈয়দপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মো. রফিকুল ইসলাম বাবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম ফজলুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মির্জা সালাউদ্দিন বেগ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুস আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.আতাউর রহমান ময়না, প্রজন্ম ’৭১ সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মনজুর হোসেন, মো. মুজিবুল হক, মিজানুল হক, আব্দুর রশীদ, আওয়ালী লীগ নেতা একেএম রাশেদুজ্জামান রাশেদ, সাংবাদিক এম আর আলম ঝন্টু, সৈয়দপুর হিন্দু কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমিত আওরওয়ালা নিক্কি, সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় শ্মশান কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিদ্যূৎ মজুমদার, সহ-সভাপতি বরেন্দ্র কিশোর রায়, অর্থ সম্পাদক মানস কুমার দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জীব কুমার গুপ্তা (জনি)সহ উপস্থিত ছিলেন।
দিবসটিতে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সন্তানদের সংগঠন প্রজন্ম ’৭১ সৈয়দপুর উপজেলা শাখার গৃহিত অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল শহরের সকল বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, মিলাদ-মাহফিল ও বিশেষ দোয়া। আর এবারে চলমান বৈশ্বিক প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রার্দূভাবের কারণে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে দিবসের কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে পাক হানাদারবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা সৈয়দপুরের রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, সরকারি চাকরিজীবীসহ স্বাধীনতাকামী নিরীহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রায় দেড় শ’ মানুষকে ধরে নিয়ে গিয়ে সৈয়দপুর সেনানিবাসে আটকে রাখে। সেখানে দীর্ঘ প্রায় ১৯ দিন তাদের ওপর চালানা হয় নির্মম অত্যাচার-নির্যাতন। এরপর ’৭১ এর ১২ এপ্রিল এদের সৈয়দপুর শহর থেকে ৪০ কি.মি দূরে রংপুর সেনানিবাসের দক্ষিণে নিসবেতগঞ্জ এলাকায় ঘাঘট নদীর বালুচরে বুলেটের আঘাতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেই থেকে ১২ এপ্রিল দিনটিকে সৈয়দপুরের স্থানীয় শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।